রাজনীতি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: শেখ হাসিনা, কামালসহ তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড; ৫৪ জনের সাক্ষ্য

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: শেখ হাসিনা, কামালসহ তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড; ৫৪ জনের সাক্ষ্য

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি ঐতিহাসিক মামলার রায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন। একই মামলায় অভিযুক্ত তৃতীয় আসামিকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুনর্গঠিত হয় এবং পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি (মিসকেস) শুরু হয়। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের সময়কাল ছিল ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত।

ট্রাইব্যুনালে তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান।

  • হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের 'হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ' দেওয়া।

  • রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যার প্ররোচনা, ষড়যন্ত্র ও সহায়তা।

  • গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চাঁনখারপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা ছয়জনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ।

  • আশুলিয়ায় জীবিত একজনসহ মোট ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ।

এই মামলায় আন্দোলনকারী, আহত ব্যক্তি, প্রত্যক্ষদর্শী, এবং তাদের চিকিৎসা দানকারী চিকিৎসকসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। প্রমাণ হিসেবে শেখ হাসিনার কথোপকথনের অডিও-ভিডিও এবং জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছিল। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ২৩ অক্টোবর যুক্তি-তর্ক শেষ হয় এবং চিফ প্রসিকিউটর ও অ্যাটর্নি জেনারেল উভয়েই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছিলেন। রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।