রাজনীতি

গণহত্যার দায়ে দণ্ডিত শেখ হাসিনা: আশ্রয়দাতা ভারত কি ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে?

গণহত্যার দায়ে দণ্ডিত শেখ হাসিনা: আশ্রয়দাতা ভারত কি ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে?

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে গণহত্যার অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের কেন আশ্রয় দেওয়া উচিত, এই প্রশ্নের জবাব দিতে এখন দিল্লিকে আরও কঠিন কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। গত বছরের ডিসেম্বরে মামলার প্রাথমিক পর্যায়ে ভারত অনানুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরত না দেওয়ার কারণ হিসেবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হওয়ার আশঙ্কার কথা বললেও, বর্তমানে তিনি একজন দণ্ডিত অপরাধী হওয়ায় পরিস্থিতি পাল্টেছে।

তবে, বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রত্যর্পণ চুক্তির একাধিক ধারা ভারতকে এই অনুরোধ উপেক্ষা করার সুযোগ করে দিয়েছে। চুক্তির ১০(৩) ধারায় সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই শুধু গ্রেফতারি পরোয়ানা দিয়ে হস্তান্তরের অনুরোধ করা গেলেও, ভারত অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা ব্যবহার করে অনুরোধ খারিজ করতে পারে।

সবচেয়ে শক্তিশালী ধারাটি হলো: যদি অনুরোধ-প্রাপক দেশের (ভারত) মনে হয় যে, 'অভিযোগগুলো শুধু ন্যায়বিচারের স্বার্থে, সরল বিশ্বাসে আনা হয়নি'— তাহলে তারা সেই অনুরোধ নাকচ করতে পারে। যেহেতু বাংলাদেশের আদালতে বিচার চলাকালীন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে হেনস্তা করা বা আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে কিল-ঘুসি মারার মতো ঘটনা ঘটেছে, তাই ভারত এই দৃষ্টান্তগুলো দেখিয়ে বলতে পারে যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ন্যায্য বিচার পাননি বা পাবেন না।

এছাড়া, চুক্তিতে হত্যা, গুম, গণহত্যাকে 'রাজনৈতিক প্রকৃতির' অপরাধ হিসেবে খারিজ করা কঠিন হলেও, এই 'সরল বিশ্বাস' ধারাটিই দিল্লির জন্য শেষ রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ, নানান কৈফিয়ত দিতে হলেও শেখ হাসিনাকে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হবে না— এমনটাই ধারণা করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।