রাজনীতি

ভারতের রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকায় প্রত্যাবর্তন অনিশ্চিত: কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর পরামর্শ

ভারতের রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকায় প্রত্যাবর্তন অনিশ্চিত: কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর পরামর্শ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার সরকারি উদ্যোগ চললেও, বিশ্লেষক মহল মনে করছে, নয়াদিল্লির রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবেই এই প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা ক্ষীণ। তাঁদের মতে, বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তিতে সংশোধনী আনা হলেও যে ব্যক্তি ভারতের প্রতি অনুগত এবং যাদের স্বার্থ হাসিল হয়, সেই ব্যক্তিকে ভারত স্বাভাবিকভাবেই ফেরত দিতে চাইবে না।

২০১৩ সালে দুই দেশের মধ্যে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি সই হয় এবং ২০১৬ সালে এর সংশোধনী আনা হয়, যেখানে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেই প্রত্যর্পণের সুযোগ রাখা হয়। তবে চুক্তিতে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের বাইরে রাখার শর্তই মূল প্রতিবন্ধক বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলেন, যদিও শেখ হাসিনা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, তাঁর বিরুদ্ধে থাকা হত্যা, খুন এবং গুমের অভিযোগগুলোকে কোনোভাবেই 'রাজনৈতিক' বিবেচনা করা উচিত নয়। তাঁদের অভিমত, ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি চায়, তবে এই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে সহজেই বাংলাদেশে ফেরত দিতে পারে।

বিশ্লেষকদের পরামর্শ, এই কূটনৈতিক জটিলতা নিরসনে ভারতীয় জনগণের পক্ষ থেকে দেশটির সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি হলে বিষয়টি সহজ হতে পারে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রচেষ্টা ধারাবাহিকভাবে চলমান থাকবে এবং প্রয়োজনে বারবার চিঠি দেওয়া হবে।

পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সরকার তাঁকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং কার্যক্রম শুরু হবে। তবে তাঁকে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি নাকি অপরাধী হিসেবে ফেরত আনা হবে, তা এই মুহূর্তে সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে ফেরত আনার সম্ভাবনাই বেশি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সরাসরি মন্তব্য পাওয়া যায়নি। জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম ভূইয়া বিষয়টিকে 'কূটনৈতিক এবং সেনসেটিভ' উল্লেখ করে কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। সামগ্রিকভাবে, সরকারের একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে আশাবাদী হলেও, ভারতের রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোই একমাত্র বিকল্প বলে মনে করছে বিশ্লেষক মহল।