এশিয়ার দুই বৃহৎ অর্থনীতি চীন ও জাপানের মধ্যে দীর্ঘদিনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর কূটনৈতিক বিবাদ শুরু হয়েছে, যার মূল কারণ জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির তাইওয়ান সম্পর্কিত মন্তব্য। তাকাইচি সম্প্রতি জাপানি এমপিদের সামনে বলেন, যদি চীন তাইওয়ানে হামলা করে এবং তা জাপানের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে, তবে টোকিওর পক্ষ থেকে সামরিক প্রতিক্রিয়া উসকে উঠতে পারে। তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড দাবি করা বেইজিং এই মন্তব্যকে অত্যন্ত আগ্রাসী হিসেবে দেখছে এবং এর জেরেই জাপানে ভ্রমণ বয়কটের মতো অর্থনৈতিক সতর্কতা আরোপ করেছে।
চীনের একজন কূটনীতিক এবং রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম তাকাইচির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা শুরু করেছে। এর জেরে জাপানও সোমবার তার নাগরিকদের চীনে ভিড়যুক্ত এলাকা এড়িয়ে চলতে এবং বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে। বেইজিং অবিলম্বে তাকাইচির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানালেও টোকিও বলছে, তার বক্তব্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্ধারিত অবস্থানের মধ্যেই আছে। এই অনড় অবস্থান দ্রুত কোনো সমাধানের সম্ভাবনাকে বাতিল করে দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পরিস্থিতি কেবল পর্যটনেই সীমাবদ্ধ নেই; চীন আসন্ন জাপানি চলচ্চিত্রগুলোর প্রদর্শন স্থগিত করেছে। অন্যদিকে, চীনে জনপ্রিয় জাপানি তারকারা সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া এড়াতে প্রকাশ্যে নিজেদের অবস্থান জানাতে শুরু করেছেন। মঙ্গলবার জনপ্রিয় জাপানি গায়িকা মারিয়া চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোতে লিখেছেন যে তিনি সর্বদা 'এক চীন নীতিকে' সমর্থন করেন এবং চীনকে নিজের দ্বিতীয় মাতৃভূমির মতো দেখেন।
ট্যুর অপারেটর ইউ জিনশিন ২০১২ সালের সংকটের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেবার বিতর্কিত দ্বীপগুলো রাষ্ট্রীয়করণের সময়ও তাদের প্রতিষ্ঠান টিকে গিয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যাপক হারে ফ্লাইট বাতিল হওয়া (অনুমানিক পাঁচ লাখ টিকিট) এবং উভয় দেশের অনড় অবস্থান এই সংকটকে দীর্ঘস্থায়ী করতে পারে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্কে বড় ধরনের আঘাত আসবে, যা এশীয় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্যও উদ্বেগের কারণ।
