বিশ্ব

দীর্ঘ যুদ্ধের কৌশল: সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্রুততা ও সমন্বয়ের ওপর জোর ভারতীয় সামরিক বাহিনীর

দীর্ঘ যুদ্ধের কৌশল: সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্রুততা ও সমন্বয়ের ওপর জোর ভারতীয় সামরিক বাহিনীর

নয়াদিল্লির 'চাণক্য প্রতিরক্ষা সংলাপ' মঞ্চে ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী সামরিক অভিযানের অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া অভ্যন্তরীণ কৌশলগত পাঠগুলো বিশদভাবে তুলে ধরেন। সোমবার (১৭ নভেম্বর) দেওয়া তাঁর বক্তব্য অনুসারে, প্রতিটি সামরিক অপারেশনই ভবিষ্যতের জন্য নতুন কিছু শিক্ষা দেয়, আর 'অপারেশন সিন্দুর' ছিল সেই শিক্ষালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

জেনারেল দ্বিবেদী অভিযানে পাওয়া তিনটি মূল শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন, যা ভবিষ্যৎ সামরিক প্রস্তুতির ভিত্তি তৈরি করবে।

প্রথমত, সময়মতো ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ: তিনি উল্লেখ করেন যে, এমন পরিস্থিতিতে সামরিক নেতৃত্বের কাছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য খুব কম সময় থাকে। তাই, কমান্ড শৃঙ্খলের প্রতিটি স্তরে, অর্থাৎ একদম নিম্নস্তর পর্যন্ত সময়মতো এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা নিশ্চিত করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষা।

দ্বিতীয়ত, আন্তঃবাহিনী সমন্বয়: কার্যকরভাবে শত্রুর মোকাবিলা করার জন্য সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন শাখার মধ্যে নিখুঁত ও নিবিড় সমন্বয় বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা তিনি তুলে ধরেন। সমন্বয়ের ঘাটতি যেন কোনোভাবেই সামগ্রিক অপারেশনের গতি কমিয়ে না দেয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।

তৃতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদী সরবরাহ শৃঙ্খল: আধুনিক যুদ্ধে লজিস্টিকস বা সরবরাহ শৃঙ্খলের গুরুত্ব অপরিসীম। সেনাপ্রধান স্পষ্ট করে বলেন, দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের জন্য, এমনকি যদি পরিস্থিতি চার বছর পর্যন্তও গড়ায়, তবে খাদ্য এবং গোলাবারুদসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর যথাযথ সরবরাহ বজায় রাখা ভারতের জন্য অত্যাবশ্যক। এই লজিস্টিকস প্রস্তুতি দেশের সামরিক কৌশলের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

জেনারেল দ্বিবেদীর এই বিশ্লেষণ প্রমাণ করে যে, ভারতীয় সামরিক নেতৃত্ব কেবল অভিযান পরিচালনা নয়, বরং সেগুলোর গভীর বিশ্লেষণ ও লব্ধ জ্ঞানের ভিত্তিতে নিজেদের কৌশলগত কাঠামোকে প্রতিনিয়ত উন্নত করার ওপর জোর দিচ্ছে। এটি একটি পেশাদার বাহিনীর আত্ম-উন্নয়ন এবং ভবিষ্যতের সামরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের গুরুতর অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে।