রাজনীতি

বড় জোটের ইঙ্গিত: 'এক বাক্স' নীতিতে সাবেক ভিসি ও ছাত্রনেতাদের নিয়ে আসছে জামায়াত

বড় জোটের ইঙ্গিত: 'এক বাক্স' নীতিতে সাবেক ভিসি ও ছাত্রনেতাদের নিয়ে আসছে জামায়াত

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের নির্বাচনি কৌশলে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে, যার মূল লক্ষ্য হলো ইসলামপন্থি সকল শক্তিকে এক ছাতার নিচে আনা এবং বৃহত্তর সামাজিক গোষ্ঠীর সমর্থন নিশ্চিত করা। জামায়াতের এই নতুন কৌশলের স্লোগান হলো—"ইসলামপন্থিদের বাক্স হবে একটি"। এই লক্ষ্য পূরণে তারা দলের বাইরে থেকেও বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন শক্তিশালী প্রার্থীদের দলে টানছে।

সূত্রমতে, জামায়াতের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় অন্তত চারজন সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) যুক্ত হতে পারেন। তাদের শিক্ষাগত দক্ষতা এবং সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ভোটের মাঠে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এর পাশাপাশি, সদ্য সমাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নির্বাচিত তিনজন ভিপি এবং দুজন জিএসসহ বেশ কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধিকে মনোনয়ন দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে জামায়াত। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই ছাত্রনেতারা সকলেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির নেতা ছিলেন।

আসন ছাড়ের কৌশল:

যদিও ইতঃপূর্বে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ১০০ আসন ছাড় দেওয়ার কথা বলেছিলেন, তবে বর্তমানে শরিক দলগুলো আসন সংখ্যার ভাগাভাগি থেকে সরে এসে 'বিজয়ী হওয়ার' লক্ষ্যে একমত হয়েছে। তাদের যৌথ সিদ্ধান্ত হলো: যিনিই জিততে পারবেন, তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। এই নমনীয় মনোভাবের কারণে শরিকদের সঙ্গে একটি শক্তিশালী জোট গঠন আরও সহজ হবে।

এছাড়াও, এক উপদেষ্টাসহ আরও কয়েকজন প্রভাবশালী জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নেতার জন্য জামায়াত বেশ কিছু আসন ছাড় দিতে পারে। এমনকি যদি তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে জোট নাও হয়, তবুও তাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে কিছু আসন ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যা বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য এবং আন্দোলনের প্রতি সমর্থনকে তুলে ধরে।

বহুত্ববাদী সমাজের বার্তা:

ইসলামপন্থি দল হিসেবে পরিচিত হলেও, জামায়াত এবার তাদের প্রার্থী তালিকায় সমাজের যে বৈচিত্র্য আনছে (অমুসলিম, উপজাতি ও নারী), তা তাদের একটি নমনীয় এবং বহুত্ববাদী সমাজের প্রতি অঙ্গীকারকেই প্রকাশ করে। এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন উদারপন্থি ভোটারদের কাছে তাদের ভাবমূর্তি উন্নত করবে, তেমনি অন্যদিকে একটি বিস্তৃত সামাজিক ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য করবে। এই কৌশলটি ভোটের রাজনীতিতে কতটা কার্যকর হয়, সেদিকেই এখন নজর রাখছে রাজনৈতিক মহল।