রাজনীতি

'এতিমের টাকা মারার' দিন শেষ? সংসদে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন রিকশাচালক সুজন

'এতিমের টাকা মারার' দিন শেষ? সংসদে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন রিকশাচালক সুজন

দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। জুলাই অভ্যুত্থানে স্যালুট দিয়ে গণআন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠা রিকশাচালক সুজন এবার সরাসরি ভোটের লড়াইয়ে নামছেন। আজ (বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) হয়ে তিনি ঢাকা-৮ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এনসিপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়, যেখানে সুজনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা।

সুজনের এই সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে এটিকে সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকে বলছেন এটি ভোটের রাজনীতিতে এক নতুন চমক। তবে সুজনের বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট ও সরাসরি। মনোনয়ন ফরম কেনার পর সাংবাদিকদের সামনে তিনি প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “অনেকে এতিমের টাকা মেরে, যাত্রাপালা করে সংসদে যেতে পারেন। আমি রিকশাচালক হয়ে কেনো সংসদে যেতে পারবো না?” তার এই প্রশ্নটি মূলত ধনতন্ত্র ও ক্ষমতার বলয়ে আবদ্ধ রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে।

ঢাকা-৮ আসনটি রাজধানীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলো নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে রয়েছে মতিঝিল, শাহবাগ, রমনা, পল্টন ও শাহজাহানপুর। এই আসনে সুজনের মতো তৃণমূলের একজন প্রার্থীর মনোনয়ন সংগ্রহ নিঃসন্দেহে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে। এনসিপি নেতারা এসময় 'ঢাকা-৮ আসন' লেখা সম্বলিত কাগজ প্রদর্শন করে সুজনের প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা নির্বাচনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

উল্লেখ্য, জুলাই বিপ্লবের সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সুজনের স্যালুট দেওয়ার ছবিটি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ওঠে এবং তাকে রাতারাতি আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসে। তার সেই ভঙ্গিমা গণজাগরণের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হওয়ায়, এবার তার রাজনৈতিক অভিযাত্রাও দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হতে পারে। এনসিপি জানিয়েছে, আজ ছিল তাদের মনোনয়ন ফরম বিক্রির শেষ দিন, যেখানে তারা মোট তিন হাজার ফরম বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।