জীবনের বিভিন্ন বাঁকে মানুষ যখন দিশেহারা হয়ে পড়ে, তখন মুমিন মুসলমানের জন্য সবচেয়ে বড় পাথেয় হলো মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করা। কঠিন পরিস্থিতিকে কীভাবে ধৈর্যের সাথে এবং আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে পার করা যায়, সেই শিক্ষাই দিয়েছেন তিনি। মূলত, ইসলাম ধর্ম মানুষকে শেখায় যে, পার্থিব জীবনে কোনো বিপদই স্থায়ী নয়, বরং এটি পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষায় সফল হওয়ার একমাত্র উপায় হলো আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখা।
এই ভরসা ও আশ্রয় চাওয়ার পথ হিসেবেই রাসুল (সা.) আমাদের জন্য এক সহজ ও শক্তিশালী দোয়া শিখিয়ে গেছেন, যা কঠিন দুঃখ ও দুশ্চিন্তা দূর করার কার্যকরী মাধ্যম। এই দোয়ার মূল নির্যাস হলো—সর্বোচ্চ শক্তি ও ক্ষমতা শুধুমাত্র আল্লাহর হাতেই কেন্দ্রীভূত। আমাদের জীবনের কোনো সাফল্য বা স্বস্তিই আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া অর্জিত হতে পারে না।
দোয়াটি হলো: اللَّهُمَّ لا سَهْلَ إِلا مَا جَعَلْتَهُ سَهْلا، وَأَنْتَ إِنْ شِئْتَ جَعَلْتَ الْحَزَنَ سَهْلا। উচ্চারণ ও অর্থ উভয়ই মুমিনের জন্য গভীর তাৎপর্য বহন করে: ‘হে আল্লাহ! আপনি যা সহজ করেন তা ছাড়া কিছুই সহজ নয়। আর আপনি ইচ্ছা করলে খুব কঠিন কাজও সহজ করেন।’ (ইবনে হিব্বান ৯৭০)।
এই দোয়া পাঠের সময় মুমিনের হৃদয়ে এই বিশ্বাস জন্মে যে, তিনি তাঁর জীবনের ভার এমন এক সত্তার হাতে তুলে দিচ্ছেন, যিনি 'আল-কাদির' বা সর্বশক্তিমান। এই আধ্যাত্মিক অভ্যাসটি ব্যক্তিকে মানসিক চাপ থেকে মুক্ত করে, ধৈর্যশীল করে তোলে এবং কঠিন পরিস্থিতিকে সহজভাবে গ্রহণ করার শক্তি জোগায়। তাই ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের উচিত, কেবল কঠিন কাজ সম্পাদনের জন্য নয়, বরং মানসিক শান্তি এবং জীবন পথে চলার প্রেরণা পেতে নবীজির (সা.) এই মূল্যবান নির্দেশনাটিকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ করে তোলা।
