বিশ্ব

উত্তর ভারতে কাশ্মীরী শিক্ষার্থীদের জীবন বিপন্ন, চরমপন্থীদের নতুন দাবি

উত্তর ভারতে কাশ্মীরী শিক্ষার্থীদের জীবন বিপন্ন, চরমপন্থীদের নতুন দাবি

দিল্লির লাল কেল্লার বিস্ফোরণ কেবল কাশ্মীরের অভ্যন্তরেই নয়, ভারতের উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থান ও দিল্লির মতো বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী কাশ্মীরী জনগণের জীবনেও চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। জম্মু ও কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (JKSA) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পর দেশজুড়ে কাশ্মীরী ছাত্রছাত্রীদের হুমকি এবং বাড়ি খালি করার মতো চাপে পড়তে হচ্ছে।

কাশ্মীরী শিক্ষার্থীরা বর্তমানে ব্যাপক সামাজিক অবিশ্বাস ও সন্দেহের শিকার। দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে JKSA-এর ন্যাশনাল কনভেনর নাসির খুইহামী বলেন, বিস্ফোরণের পর দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং আবাসিক এলাকায় কাশ্মীরীদের বিরুদ্ধে সন্দেহ ও অবিশ্বাস বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতি কাশ্মীরী যুবকদের স্বাভাবিক জীবন ও শিক্ষাজীবনে সরাসরি বাধা সৃষ্টি করছে।

এদিকে, ডানপন্থি রাজনৈতিক শক্তিগুলো সামাজিক মাধ্যমে ঘটনাটিকে পুরোপুরি মুসলিমবিরোধী রূপ দিতে সচেষ্ট হয়েছে। কোনো প্রকার প্রমাণ ছাড়াই তারা বিস্ফোরণের দায়ভার কাশ্মীরী মুসলিমদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে এবং প্রকাশ্যে গণগ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছে। এই প্রচারণা দেশের অন্যান্য প্রান্তে থাকা কাশ্মীরীদের জন্য মারাত্মক মানসিক নির্যাতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে, জম্মু অঞ্চলে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি মুসলিম শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্বেষমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। জম্মুর আরএসএস-এর 'সংঘ পরিবার'-এর সাথে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠন শ্রীমাতা বৈষ্ণদেবী ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল এক্সেলেন্স-এ শিক্ষার্থীদের ভর্তির তালিকা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছে। তাদের মূল দাবি হলো, প্রথম ব্যাচে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯০ শতাংশই মুসলিম এবং তারা কাশ্মীরের বাসিন্দা। এই ঘটনা ভারতে ধর্মীয় পরিচয় ও আঞ্চলিকতার ভিত্তিতে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরির একটি স্পষ্ট উদাহরণ। এই বিদ্বেষমূলক পদক্ষেপগুলো কাশ্মীরের বাইরে বসবাসকারী মুসলিমদের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি করছে, যা তাদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতের জন্য গুরুতর হুমকি।