জাতীয়

‘জুড়িবোর্ডের আড়ালে গোপন কমিটি’: মিস ইউনিভার্সে বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন!

‘জুড়িবোর্ডের আড়ালে গোপন কমিটি’: মিস ইউনিভার্সে বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন!

বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত সুন্দরী প্রতিযোগিতা ‘মিস ইউনিভার্স’ ৭৪তম আসরের বিজয়ী ঘোষণা হওয়ার পর বড় ধরনের স্বচ্ছতা সংকটে পড়েছে। বিজয়ীর নাম—মেক্সিকান ফাতিমা বশ—ঘোষণা হওয়ার পরপরই জুরিবোর্ড থেকে দুই আন্তর্জাতিক বিচারকের পদত্যাগ গোটা আয়োজনকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে লেবানিজ-ফরাসি সংগীতশিল্পী ওমর হারফুশের বিস্ফোরক অভিযোগ, যিনি বিচার প্রক্রিয়ায় 'কারচুপি' ও 'অনানুষ্ঠানিক জুরি'র হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছেন।

ওমর হারফুশ তার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে স্পষ্টভাবে অভিযোগ করেন যে মূল আট সদস্যের জুরির অজান্তেই ১৩৬ জন প্রতিযোগীর মধ্য থেকে ৩০ জন ফাইনালিস্টকে বাছাইয়ের জন্য একটি গোপন কমিটি কাজ করেছে। তিনি হতবাক হয়ে উল্লেখ করেন যে এই অনানুষ্ঠানিক জুরির সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় মূল জুরির কেউই উপস্থিত ছিলেন না, এমনকি তিনিও বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে জানতে পারেন। হারফুশের দাবি, এই গোপন কমিটিতে এমন ব্যক্তিরা রয়েছেন যাদের কিছু প্রতিযোগীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে, যা চূড়ান্তভাবে ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে।

হারফুশের এই অভিযোগের ঘণ্টাখানেক পরই একই জুরিবোর্ড থেকে সরে দাঁড়ান ফরাসি ফুটবল ম্যানেজার ক্লদ মাকেলেলে। যদিও মাকেলেলে তার পদত্যাগের কারণ হিসেবে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ উল্লেখ করেন, বিতর্কিত মুহূর্তে এই পদক্ষেপ প্রতিযোগিতার ভেতরের চিত্র সম্পর্কে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। তবে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ হারফুশের সব অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

কর্তৃপক্ষ দাবি করে, কোনো ‘বাইরের দল’ প্রতিযোগীদের মূল্যায়ন করেনি। তাদের মতে, হারফুশ হয়তো 'বিয়ন্ড দ্য ক্রাউন' নামক একটি সামাজিক উদ্যোগকে ভুল বুঝেছেন। এটি মূল প্রতিযোগিতা থেকে আলাদা একটি মানবিক ও সামাজিক প্ল্যাটফর্ম যার নিজস্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া রয়েছে। হারফুশ তার অভিযোগের পক্ষে অনানুষ্ঠানিক জুরির কার্যপদ্ধতি বা মূল জুরির ভূমিকা তারা কীভাবে অকার্যকর করেছে, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা না দিলেও, তার পদত্যাগই বিতর্কের জন্ম দিতে যথেষ্ট ছিল।

এই বিচারিক বিতর্কের কয়েক দিন আগেই থাইল্যান্ডের আয়োজক কমিটির পরিচালক নাওয়াত ইটসারাগ্রিসিলের বিতর্কিত মন্তব্যের কারণেও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। তার মন্তব্য ও আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে মিস মেক্সিকো ফাতিমা বশসহ একাধিক প্রতিযোগী অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে যান। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নাওয়াতের আচরণের সমালোচনা করা হয়। ফলস্বরূপ, এবারের মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতাটি একদিকে যেমন মেক্সিকোর মুকুট জয় দেখল, অন্যদিকে তেমনি এর বিশ্বাসযোগ্যতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন তৈরি হলো।