জাতীয়

প্রতিবাদ থেকে বিজয়: বিতর্কের আগুন পেরিয়ে মিস ইউনিভার্সের মুকুট ছিনিয়ে নিলেন ফাতিমা

প্রতিবাদ থেকে বিজয়: বিতর্কের আগুন পেরিয়ে মিস ইউনিভার্সের মুকুট ছিনিয়ে নিলেন ফাতিমা

৭৪তম মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার মঞ্চ সাক্ষী হলো এক নজিরবিহীন নাটকীয়তা এবং বিজয়ের। মেক্সিকোর ফাতিমা বশ কেবল সৌন্দর্য আর বুদ্ধিমত্তায় সেরা হয়ে মুকুট জেতেননি, তিনি জয় করেছেন নারীত্বের আত্মমর্যাদা রক্ষার যুদ্ধে। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এই ইভেন্টের প্রারম্ভিক পর্ব থেকেই ফাতিমা ছিলেন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে।

২ নভেম্বর প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগেই মিস ইউনিভার্স থাইল্যান্ডের পরিচালক নাওয়াত ইতসারাগ্রিসিলের কাছ থেকে তিনি চরম কটাক্ষ শুনতে পান। প্রমোশনাল কাজ সময়মতো শেষ করতে না পারার কারণে ফাতিমাকে ‘ডাম্বহেড’ বলে সম্বোধন করা হয়। একজন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীকে সবার সামনে এভাবে অপমান করাটা সাংবাদিকতা এবং সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত সমালোচিত হয়।

এই মন্তব্যের বিপরীতে ফাতিমা যে জবাব দেন, তা গোটা প্রতিযোগিতার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তিনি নির্ভয়ে পরিচালকের দিকে আঙুল তুলে বলেন, "আপনি আমাকে একজন নারী হিসেবে যথাযথ সম্মান দিচ্ছেন না।" এই সাহসী পদক্ষেপের পর যখন সঞ্চালক নিরাপত্তা ডেকে তাকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করেন, তখন বাকি প্রতিযোগীদের সংহতি ফাতিমার মনোবল বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। সকল প্রতিযোগী একযোগে প্রতিবাদ স্বরূপ হল ত্যাগ করেন, যা সরাসরি সম্প্রচারে এক ঐতিহাসিক দৃশ্য সৃষ্টি করে। এটি স্পষ্ট করে যে, সৌন্দর্যের মঞ্চে আত্মমর্যাদার মূল্য সবচেয়ে বেশি।

২১ নভেম্বর ফাইনাল পর্বে পাঁচটি দেশের সেরা সুন্দরীরা – থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ভেনেজুয়েলা, মেক্সিকো ও আইভরি কোস্ট – চূড়ান্ত প্রশ্নের সম্মুখীন হন। বিচারকদের প্রশ্নের সঠিক ও গভীর জবাবে ফাতিমা বশ তার যোগ্যতা প্রমাণ করেন এবং সেরার মুকুট ছিনিয়ে নেন। এদিকে, বাংলাদেশের প্রতিযোগী তানজিয়া জামান মিথিলা সেরা ৩০-এ জায়গা করে নিতে পারলেও সেরা ১২-তে প্রবেশের আগেই বাদ পড়েন।

ফাতিমার এই জয় প্রমাণ করে, একবিংশ শতকে একজন নারী কোনোভাবেই 'হাতের পুতুল' হতে পারেন না। তিনি এই জয়কে সমগ্র নারীজাতির প্রতি উৎসর্গ করে বলেন, "আমাকে অসম্মান করা মানে পুরো নারী জাতিকে অসম্মান করা।