জাতীয়

হেলে পড়ার গুঞ্জন: ভূমিকম্পের আতঙ্কে ভাইরাল নীলক্ষেতের বহুতল!

হেলে পড়ার গুঞ্জন: ভূমিকম্পের আতঙ্কে ভাইরাল নীলক্ষেতের বহুতল!

ঢাকা, ২২ নভেম্বর, ২০২৫:—সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ভবন হেলে পড়া বা ভেঙে পড়ার উদ্বেগজনক খবর আসছে। এই চাপা উত্তেজনার মধ্যেই ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে একটি খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে: নীলক্ষেতের একটি বহুতল ভবন নাকি ভূমিকম্পের ধাক্কায় হেলে গেছে।

ব্যাপক গুঞ্জন ও জনমনে তৈরি হওয়া আতঙ্কের পরিপ্রেক্ষিতে, একাধিক প্রতিষ্ঠান এই তথ্য যাচাইয়ের কাজ শুরু করে। শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়, নীলক্ষেতের ভবনটি হেলে যাওয়ার খবরটি ছিল একটি স্রেফ গুজব। এই গুজবের উৎপত্তি কোনো নতুন দুর্ঘটনা থেকে নয়, বরং ভবনটির বহু পুরোনো ও বিশেষ কাঠামোগত নকশা থেকে।

বিভিন্ন ফ্যাক্ট চেকিং প্ল্যাটফর্ম এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে বেরিয়ে আসে যে, ভবনটির নির্মাণ কাঠামো শুরু থেকেই কিছুটা পূর্ব-পশ্চিমে বাঁকা। ভূমিকম্পের পর সাধারণ মানুষ যখন আতঙ্কিত অবস্থায় ভবনটি পর্যবেক্ষণ করেন, তখন এই বিদ্যমান বাঁকটিকেই তারা হেলে পড়া হিসেবে ভুল করেন এবং দ্রুত সেই ছবি ও তথ্য ফেসবুকে পোস্ট করেন।

একটি ফটো কার্ডের মাধ্যমে রিউমর স্ক্যানার বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। তারা প্রমাণ হিসেবে ২০২৩ সালের গুগল স্ক্রিনশট পেশ করেছে, যেখানে দেখা যায় যে ভবনটির এই 'হেলে পড়া' ভাবটি নতুন নয়, বরং নির্মাণের পর থেকেই বিদ্যমান। অর্থাৎ, ভূমিকম্পের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই এবং এটি কোনো জরুরি পরিস্থিতিও সৃষ্টি করেনি।

দুর্যোগের সময় ভুল তথ্যের দ্রুত বিস্তার সমাজে ব্যাপক বিভ্রান্তি ও অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এই ঘটনায় নীলক্ষেতের বহু বাসিন্দা মিথ্যা আশঙ্কায় সময় কাটিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ বারবার সতর্কতা জারি করলেও, অনলাইনে তথ্যের এই দ্রুত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।

এই গুঞ্জনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে: বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কেবল সরকারি ও নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যকেই বিশ্বাস করা উচিত। স্থানীয়ভাবে প্রচারিত বা সামাজিক মাধ্যমে আসা খবরগুলো যাচাই না করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া বা আতঙ্কিত হওয়া উচিত নয়। সৌভাগ্যবশত, নীলক্ষেতের ভবনটিতে কোনো ক্ষতি হয়নি।