ধর্ম ও শিক্ষা

ক্ষমা ও শান্তির ঠিকানা: সুন্নাত অনুসরণের মাধ্যমেই বরকতময় জীবন নিশ্চিত

ক্ষমা ও শান্তির ঠিকানা: সুন্নাত অনুসরণের মাধ্যমেই বরকতময় জীবন নিশ্চিত

নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সুন্নাত অনুসরণ শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, বরং এটি জাগতিক সমৃদ্ধি এবং আধ্যাত্মিক শান্তির এক নিশ্চিত পথ। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা এই সুন্নাহ পালনের মাধ্যমেই তাঁর ভালোবাসা ও ক্ষমা প্রাপ্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সুরা আল-ইমরানের একটি আয়াতে বলা হয়েছে: "(হে রাসুল! আপনি) বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তাহলে আমার অনুসরণ কর। ফলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করবেন।" (সুরা আল-ইমরান: আয়াত ৩১)। এই আয়াতটি সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে, আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের একমাত্র মাধ্যম হলো নবীজির (সা.) আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করা।

সুন্নাত অনুসরণের ফলে জীবনে এক বিশেষ ধরনের সমৃদ্ধি ও 'বরকত' বয়ে আসে। ইবাদত থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট কাজেও সুন্নাহর নিয়ম মেনে চললে তা জীবনকে সহজ, শান্তিপূর্ণ ও অর্থবহ করে তোলে। এর বিপরীতে, রাসুলুল্লাহ (সা.) সতর্ক করে বলেছেন, "যে ব্যক্তি এমন কোনো আমল করবে, যে বিষয়ে আমার অনুমোদন নেই, তা আমলকারীর ওপর প্রত্যাখ্যাত হবে।" (মুসলিম ১৭১৮)। এর অর্থ, সুন্নাহ-বহির্ভূত আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না। তাই দুনিয়া ও আখিরাতে সুখ-শান্তি নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই সুন্নতের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

নবীজির (সা.) চরিত্রকে ‘উসওয়াতুন হাসানা’ বা সর্বোত্তম আদর্শ বলা হয়েছে। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করলে মানুষের মন পরিশুদ্ধ হয় এবং মানবিক জীবনের সর্বোত্তম গুণাবলি প্রকাশিত হয়। তাঁর চরিত্র দয়া, সততা ও সর্বোত্তম নৈতিকতার প্রতীক ছিল। তিনি নিজেই বলেছেন, "আমি শুধু নৈতিকতার সেরা গুণাবলি সম্পূর্ণ করার জন্য প্রেরিত হয়েছি।" (আহমাদ ৮৯৫২)। সুতরাং, সুন্নাত পালন একজন মুসলিমকে কেবল আল্লাহর নৈকট্যই এনে দেয় না, বরং তাকে সমাজের একজন উন্নত ও আদর্শ মানুষ হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করে। সুন্নাত হলো মুসলিম জীবনের ভিত্তি, যা আমাদের হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করে এবং মনকে দৃঢ় করে।