জাতীয়

ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে দেশ: বারবার কম্পন কিসের ইঙ্গিত?

ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে দেশ: বারবার কম্পন কিসের ইঙ্গিত?

গত দুদিনে তিনবার কেঁপে উঠল বাংলাদেশ। শুক্রবার ৫.৭ মাত্রার মূল ভূমিকম্পের পর শনিবার সকালে ৩.৩ এবং সন্ধ্যায় ৪.৩ মাত্রার মৃদু কম্পন অনুভূত হয়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম এই পরবর্তী দুটি কম্পনকে ‘আফটার শক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এই কম্পনগুলি প্রমাণ করে যে দেশের ভূস্তর এখনও অস্থির রয়েছে।

পরিচালক মোমিনুল ইসলাম জানান, বড় ভূমিকম্পের পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আফটার শক আসা খুবই স্বাভাবিক। তবে তিনি বিশেষভাবে সতর্ক করে দেন যে, আতঙ্কিত না হয়ে প্রতিটি শকের সময় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। আফটার শকের মাত্রা সাধারণত মূল ভূমিকম্পের চেয়ে এক পয়েন্ট কম থাকে, যা আজকের কম্পনগুলির ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হয়েছে।

গতকাল তুলনামূলক কম মাত্রার (৫.৭) ভূমিকম্প হওয়া সত্ত্বেও এর তীব্রতা ও স্থায়িত্ব বেশি অনুভূত হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, এর মূলে রয়েছে মাটির দুর্বলতা। অপেক্ষাকৃত দুর্বল মাটির গঠনের কারণেই ভূমিকম্পের ওয়েভ বা তরঙ্গ দীর্ঘ সময় ধরে ঝাঁকুনি সৃষ্টি করে, যার ফলে ভূপৃষ্ঠে কম্পন তীব্রভাবে অনুভূত হয়।

এই বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই একাধিক কম্পনের ঘটনা দেশের জন্য একটি গুরুতর সতর্কবার্তা। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে বাংলাদেশ একটি অত্যন্ত ভূমিকম্প-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে অবস্থিত। এই ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য তিনি জরুরি ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন। এর মধ্যে প্রধান হলো ভবন নির্মাণে অবশ্যই দেশের বিদ্যমান বিল্ডিং কোড কঠোরভাবে অনুসরণ করা। এছাড়াও, তিনি দুর্যোগের সময় জরুরি আশ্রয়ের স্থান হিসেবে ব্যবহৃতব্য খোলা মাঠ ও পার্কগুলিকে সংরক্ষণ এবং উদ্ধার কাজ সহজ করার জন্য ভবন সংলগ্ন রাস্তাগুলি সুপ্রশস্থ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। দেশের ভবিষ্যতের সুরক্ষার জন্য এই কাঠামোগত প্রস্তুতি অত্যাবশ্যক।