জাতীয়

মেট্রোরেল ফাটল: কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত, কিন্তু যাত্রীরা শঙ্কিত!

মেট্রোরেল ফাটল: কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত, কিন্তু যাত্রীরা শঙ্কিত!

ঢাকাবাসীর গর্বের মেট্রোরেল শুক্রবারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ দ্রুত ড্যামেজ কন্ট্রোল বা ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার উদ্যোগ নিলেও তাদের কিছু পদক্ষেপ অস্বচ্ছতা সৃষ্টি করেছে। চার স্টেশনে ফাটল ও টাইলস খসে পড়ার মতো দৃশ্যমান ক্ষতির পর কর্তৃপক্ষের প্রথম কাজ ছিল ফাটলগুলো আস্তর দিয়ে ঢেকে দেওয়া এবং সাংবাদিকদের ছবি তোলা বা মন্তব্য সংগ্রহে বাধা দেওয়া। এই গোপনীয়তা যাত্রীদের শঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

বিজয় সরণি স্টেশনে ফাটলগুলোর ভয়াবহতা ছিল সবচেয়ে বেশি। ইলেকট্রিক কন্ট্রোল রুমের ফ্লোরে সৃষ্ট ফাটলটি দ্রুত আস্তর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এই ফাটল যদি শুধু ফিনিশিং লেভেলেই সীমাবদ্ধ থাকে, তবে সেটি কেন তড়িঘড়ি ঢেকে দেওয়া হলো—এই প্রশ্ন এখন জোরালো। এছাড়া, কারওয়ানবাজার, মিরপুর-১০ এবং পল্লবী স্টেশনের দেয়াল ও ফ্লোরেও ফাটল দেখা যায়। এই দৃশ্য দেখে নিয়মিত যাত্রীরা প্রশ্ন তুলছেন নির্মাণকাজের মান নিয়ে।

কর্তৃপক্ষের এই অস্বচ্ছ আচরণের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। একাধিক যাত্রী মন্তব্য করেন, "ভূমিকম্প বাদেও মেট্রোরেল দৈনিক যে মাত্রার কম্পন সৃষ্টি করে, তাতে ফাটলগুলো আরও চওড়া হতে পারে। মূল কাঠামো অক্ষত থাকার দাবি করলেও, আমাদের চোখে দেখা দৃশ্য বলছে অন্য কথা।"

অন্যদিকে, মেট্রোরেল উন্নয়ন প্রকল্প (ডিএমআরটিডিপি) এর প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল ওহাবের দাবি, এসব ফাটল মূলত প্লাস্টার বা টাইলসের স্তরে তৈরি হয়েছে এবং মূল ভৌত কাঠামোর কোনো ক্ষতি হয়নি। তিনি বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, নকশা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে এটি সর্বোচ্চ কম্পন সহ্য করার ক্ষমতা রাখে। তবুও, প্রশ্ন থেকেই যায়—যদি ক্ষতি সামান্যই হতো, তবে কর্তৃপক্ষ কেন সাংবাদিকদের সামনে স্বচ্ছভাবে তথ্য প্রকাশ করতে পারল না? বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো সরকারি মেগা প্রকল্পের এমন পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা বজায় রাখা উচিত ছিল।