পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার দক্ষিণ মুরাদিয়া গ্রামে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে, যেখানে পাওনা টাকার সূত্র ধরে একজন স্থানীয় জামায়াত নেতা আদালতের রায় বা নির্দেশ ছাড়াই এক দরিদ্র কৃষকের দুটি গরু নিয়ে গেছেন। এই ঘটনা সমাজে গরিব মানুষের ওপর প্রভাবশালীদের চাপ এবং বিচারিক প্রক্রিয়াকে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতাকেই সামনে আনছে। ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন মুরাদিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক জলিল প্যাদা।
শুক্রবার সন্ধ্যার সময় ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কৃষক আব্দুল বারেক মজুমদারের বাড়ি থেকে তার জীবিকার প্রধান অবলম্বন দুটি গরু নিয়ে যান জলিল প্যাদা। পরে ভুক্তভোগী কৃষক নিরুপায় হয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের দ্বারস্থ হন।
ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ফোরকানের উপস্থিতিতে হওয়া এক বৈঠকে জলিল প্যাদা গরু নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি খোলাখুলি স্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন যে, কৃষক বারেক মজুমদারের ছেলের কাছে তাঁর ভাইয়ের টাকা পাওনা রয়েছে, যা আদায় করার জন্যই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। একইসাথে তিনি স্বীকার করেন যে, এই পাওনা নিয়ে আদালতে একটি মামলাও চলমান।
কৃষক বারেক মজুমদার এই পদক্ষেপকে সম্পূর্ণ অমানবিক ও বেআইনি আখ্যা দিয়ে বলেন, "আমার ছেলের ব্যক্তিগত পাওনার জন্য আমাকে অসহায় জেনে আমার জীবিকা নির্বাহের প্রধান অবলম্বন গরু দুটি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী, বাবার সম্পদ ছেলের দেনার জন্য এভাবে জোরপূর্বক নেওয়া যায় না।"
ইউপি চেয়ারম্যান ফোরকান জানান, বৈঠকে জলিল প্যাদা পাওনার কথা বললেও, গরু নিয়ে যাওয়ার মতো এমন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কোনো আইনি প্রমাণ বা আদালতের আদেশ দেখাতে পারেননি। এটি সুস্পষ্টভাবে ক্ষমতা ব্যবহার করে চাপ সৃষ্টির একটি উদাহরণ। স্থানীয় সাধারণ মানুষ এই ঘটনায় আতঙ্কিত এবং তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন জানান, লিখিত অভিযোগ পেলেই পুলিশ দ্রুত আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে। আইনগত প্রক্রিয়া চলাকালীন ব্যক্তিগতভাবে সম্পদ হরণ করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করছেন সমাজ বিশ্লেষকরা।
