ভারতের 'চিকেন’স নেক' করিডোরের কৌশলগত বাহ্যিক নিরাপত্তা নিয়ে যেমন আলোচনা হয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে এর অভ্যন্তরে স্থিতিশীলতা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপরও সমান গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সম্প্রতি শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রশাসনিক ও পুলিশি সমন্বয় আরও নিবিড় করার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই করিডোর সংলগ্ন অঞ্চলে চোরাচালান, মানব পাচার এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের মতো কার্যকলাপ রুখতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে বিশেষত স্থানীয় পুলিশ এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (BSF) মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানকে আরও দ্রুত ও কার্যকর করার একটি নতুন প্রোটোকল তৈরি করা হয়। স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা সন্দেহজনক কার্যকলাপ এবং সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিয়মিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। করিডোরের পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে 'ভিলেজ ডিফেন্স কমিটি' (VDC) বা অনুরূপ গণ-নিরাপত্তা দলগুলিকে আরও সক্রিয় করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যারা স্থানীয় তথ্যের ভিত্তিতে সুরক্ষা সংস্থাগুলিকে সাহায্য করতে পারে।
এছাড়াও, শিলিগুড়ি করিডোরের ভেতর দিয়ে চলাচলকারী পণ্যবাহী যানবাহন ও যাত্রীদের ওপর নজরদারি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলিতে অতিরিক্ত চেকপোস্ট এবং ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (CCTV) ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, অভ্যন্তরীণ সুরক্ষায় যেকোনো ধরনের নাশকতা বা অস্থিরতা তৈরির প্রচেষ্টাকে দ্রুত দমন করার জন্য পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনীর যৌথ মহড়ার ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানো হবে। সামগ্রিকভাবে, এই বৈঠকটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে ‘চিকেন’স নেক’-এর নিরাপত্তা এখন কেবল সামরিক বিষয় নয়, বরং স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের সমন্বিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা বলয় তৈরি করাই এর প্রধান লক্ষ্য।
