ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফর বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির কৌশলগত সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। এই সফরের প্রধান অর্জন হিসেবে স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা এবং আন্তঃদেশীয় ইন্টারনেট সংযোগ কার্যক্রম জোরদার করতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (MoU) সই হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁও কার্যালয়ে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে এই চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়, যা দুই দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সরাসরি প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আব্দুন নাসের খান নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
এদিনের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের মধ্যে অনুষ্ঠিত একান্ত ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। এই বৈঠক দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের নেতা পর্যায়ে আস্থা ও সহযোগিতার পরিবেশ তৈরি করে। বৈঠকের পরপরই সমঝোতা স্মারক সইয়ের মাধ্যমে আলোচনার ফলপ্রসূতা দৃশ্যমান হয়। বিশেষ করে, ইন্টারনেট সংযোগের ওপর জোর দেওয়ায় ডিজিটাল যুগের চাহিদা অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও যোগাযোগের নতুন পথ খুলে যাবে।
এদিকে, কূটনৈতিক ব্যস্ততার মধ্যেই ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) নেতাদের সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎটি ছিল একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ অন্যান্য নেতারা এই সাক্ষাতে অংশ নেন। যদিও চুক্তির বিষয়বস্তু সরকারি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল, তবু রাজনৈতিক সৌজন্যতা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষই তাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শনিবার সকালে ড্রুকএয়ারের বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তাকে স্বাগত জানান, যা সফরটির গুরুত্বকে তুলে ধরে। সবমিলিয়ে, ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর এই সফরটি শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে, বরং দৃশ্যমান এবং কৌশলগত অগ্রগতির ভিত্তি স্থাপন করল।
