গাজায় রক্তক্ষয়ী হামলা বৃদ্ধির মুখে ইসরায়েল ও হামাসের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের জেরে ১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি কার্যত অর্থহীন হয়ে পড়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর দাবি করেছে, ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একজন হামাস যোদ্ধা ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলা চালানোর পরই সামরিক বাহিনী প্রতিশোধমূলক আক্রমণ শুরু করে। এই হামলার জবাবে তারা পাঁচজন শীর্ষ হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। তবে নিহত যোদ্ধাদের বিষয়ে হামাস তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে, গাজা সরকারি জনসংযোগ দপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির এই নড়বড়ে সময়ে ইসরায়েলের ৪৯৭টি লঙ্ঘনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৪২ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই শিশু, নারী ও বয়স্ক। শনিবার এক দিনেই ২৭টি লঙ্ঘনের ঘটনায় ২৪ জন শহীদ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। হামাস অবশ্য ইসরায়েলের এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, ইসরায়েলই ভিত্তিহীন অজুহাতে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে এবং চুক্তির নির্ধারিত হলুদ রেখার পশ্চিম দিকে সামরিকভাবে অগ্রসর হয়ে সীমারেখা পরিবর্তনের চেষ্টা করছে।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জাত আল-রিশক কুদস নিউজ নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ইসরায়েল চুক্তি এড়িয়ে যেতে এবং ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে ফিরে যেতে অজুহাত গড়ছে। অথচ প্রতিদিন নিয়মিতভাবে এই চুক্তি লঙ্ঘন করছে তারাই।’ ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটি মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন এসব লঙ্ঘন বন্ধে জরুরিভাবে চাপ প্রয়োগ করে এবং যুক্তরাষ্ট্র যেন তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা পালনে বাধ্য করে।
দেইর আল-বালাহ এবং নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরের মতো জনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামলার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, তাদের জীবন অসহনীয় হয়ে উঠেছে এবং যুদ্ধবিরতির এই নড়বড়ে পরিস্থিতিতে গাজার কোনো স্থানই নিরাপদ নয়। আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ তীব্র আকার ধারণ করেছে।
