আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সম্মান ও বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা রক্ষায় এক তাৎপর্যপূর্ণ আদেশ জারি করা হয়েছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের এক ঐতিহাসিক রায়ের পর সামাজিক মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের নিয়ে যেসব বিভ্রান্তিকর এবং অবমাননাকর ছবি ও মন্তব্য প্রচার করা হয়েছে, সেগুলো অবিলম্বে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন প্যানেল স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে (Suo Motu) এই আদেশ দেন।
গত ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ যে রায় ঘোষণা করে, সেখানে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। রায়টি ছিল অত্যন্ত স্পর্শকাতর, যার পরপরই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শুরু হয় বিচারকদের লক্ষ্য করে আপত্তিকর পোস্টের ছড়াছড়ি। এই পরিস্থিতি বিচারিক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিবেচনা করে ট্রাইব্যুনাল হস্তক্ষেপ করে।
রোববার (২৩ নভেম্বর) দেওয়া এই আদেশে বিটিআরসি (BTRC) চেয়ারম্যান এবং তথ্য সচিবকে সরাসরি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা সরকারি ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে এসব কনটেন্ট শনাক্ত করেন এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে চিরতরে মুছে ফেলেন। ট্রাইব্যুনালের ভাষ্য অনুযায়ী, জনগণের বাক স্বাধীনতার অধিকার অবশ্যই রয়েছে, তবে সেই স্বাধীনতা কখনো দেশের বিচার বিভাগকে অবমাননা করার ঢাল হতে পারে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নির্দেশনার মাধ্যমে আদালত মূলত একটি কঠোর বার্তা দিতে চাইল—বিচার ব্যবস্থার প্রতি সম্মান প্রদর্শন বাধ্যতামূলক এবং ট্রাইব্যুনাল তাদের বিচারকদের সুরক্ষা দিতে বদ্ধপরিকর। প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবীরাও আদালতের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই নির্দেশ কেবল অনলাইনে বিচারকদের ছবি নয়, বরং রায়ের প্রেক্ষাপটে তাদের নিয়ে করা সব ধরনের বিতর্কিত ও আইনভঙ্গকারী মন্তব্য অপসারণের ক্ষেত্র তৈরি করবে।
