জাতীয়

বঙ্গোপসাগরের তলায় অস্থিরতা! মাত্র চার দিনে ৫ বার ভূমিকম্প, নেপথ্যে কোন ভূতাত্ত্বিক রহস্য?

বঙ্গোপসাগরের তলায় অস্থিরতা! মাত্র চার দিনে ৫ বার ভূমিকম্প, নেপথ্যে কোন ভূতাত্ত্বিক রহস্য?

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার অঞ্চলে গত কয়েক দিনে ভূকম্পনের যে ধারাবাহিকতা দেখা যাচ্ছে, তা নতুন করে ভূতাত্ত্বিক উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। গত শুক্রবার (তারিখ উল্লেখ নেই) বাংলাদেশে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর এই অঞ্চলে কম্পন থেমে নেই। সর্বশেষ, রোববার মিয়ানমার উপকূলে ৫.৩ মাত্রার অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী একটি কম্পন এই অস্থিরতার পালে নতুন করে হাওয়া দিয়েছে।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা এখন এই প্রশ্ন তুলছেন যে, পরপর এতগুলি কম্পন কি কেবলই কাকতালীয়, নাকি এটি এই অঞ্চলের প্রধান ফল্ট লাইনগুলিতে জমা হওয়া বিশাল চাপের বহিঃপ্রকাশ? রোববার সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে মিয়ানমারের দাওয়েই থেকে ২৬৭ কিমি দূরে আন্দামান সাগরে আঘাত হানা ৫.৩ মাত্রার কম্পনের কেন্দ্র ছিল মাত্র ১০ কিমি গভীরে, যা এর প্রভাবকে আরও তীব্র করে তুলেছে। এর আগে থাইল্যান্ডেও এর প্রভাব অনুভূত হয়।

ভূমিকম্পের এই সিরিজ শুরু হয় বাংলাদেশের ৫.৭ মাত্রার কম্পন দিয়ে, যাতে দুঃখজনকভাবে ১০ জন মানুষ প্রাণ হারান। এর পরের দিনই বাংলাদেশে তিনটি মৃদু আফটারশক অনুভূত হয়, যা বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাসকেই সমর্থন করে। এই ঘটনার সমান্তরালে, প্রতিবেশী মিয়ানমারেও শনিবার সকালে ৩.৫ ও ৩.৭ মাত্রার দুটি মৃদু কম্পন রেকর্ড করে এনসিএস। রাতে আরও একটি ৩.৪ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়।

মাত্র চার দিনের ব্যবধানে এই অঞ্চলে মোট পাঁচটি বা তার বেশিবার ভূমিকম্প আঘাত হানা—যা ভূ-অভ্যন্তরের গভীর চাপ নির্দেশ করে। প্লেট টেকটোনিকসের দৃষ্টিকোণ থেকে, এই অঞ্চলটি ইন্ডিয়ান ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সংঘর্ষস্থলের কাছাকাছি অবস্থিত। ছোট ও মাঝারি মাত্রার এই ঘন ঘন কম্পনগুলো ভবিষ্যতে বড় ভূমিকম্পের সতর্কতা হিসেবে কাজ করতে পারে, তাই সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর জরুরি প্রস্তুতি জোরদার করা অত্যন্ত আবশ্যক। এই ধারাবাহিকতা পর্যবেক্ষণ করে ভূতাত্ত্বিক ঝুঁকিমুক্ত থাকার উপায় খোঁজা জরুরি।