ঢাকা-৮ সংসদীয় আসনে নির্বাচন ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী, যিনি এলাকার ৫,০০০ ছাত্রছাত্রীকে বিনা মূল্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেই শরিফ ওসমান হাদির বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের গুরুতর অভিযোগ এনেছেন সাবেক এনসিপি নেত্রী নীলা ইসরাফিল। তার অভিযোগের মূল বিষয়বস্তু হলো প্রার্থীর ব্যক্তিগত আচরণের মানদণ্ড এবং জনসম্মুখে ব্যবহৃত অশালীন ভাষা।
নীলা ইসরাফিল প্রশ্ন তোলেন, যিনি শিক্ষকতার মতো পবিত্র পেশায় আছেন এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করার অঙ্গীকার করছেন, তার নিজের মুখের ভাষা কেন এতটা নোংরা হবে? তার মতে, একজন জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন দেখার আগে প্রার্থীর উচিত ছিল নিজের আচরণে সংযম আনা। তিনি বলেন, "নিজে মানুষ হবার শিক্ষা নেই কিন্তু স্বপ্ন দেখে এমপি হওয়ার।" এই বক্তব্য সরাসরি হাদির নেতৃত্ব প্রদানের যোগ্যতাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
ইসরাফিল তার সমালোচনায় বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি গভীর ট্র্যাজেডি তুলে ধরেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, "দেশের ট্র্যাজেডি এখানেই অশিক্ষিত আচরণই যেখানে যোগ্যতার মাপকাঠি, সেখানেই ক্ষমতার চাবি সবচেয়ে নোংরা হাতে চলে যায়।" এই মন্তব্য দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রার্থীর নৈতিক মূল্যবোধের স্থানটি কতটুকু, সেই প্রশ্নটি সামনে এনেছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, যে ব্যক্তি নিজের জিহ্বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, সেই ব্যক্তি কীভাবে দেশের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী প্ল্যাটফর্ম—সংসদে বসে নীতি ও আইন ঠিক করবেন? তার মতে, একজন জনপ্রতিনিধির প্রাথমিক যোগ্যতা হওয়া উচিত তার ব্যক্তিগত সংযম ও সামাজিক দায়িত্ববোধ।
শিক্ষক হাদির শিক্ষাদান এবং রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার মধ্যে নৈতিক দ্বন্দ্ব তুলে ধরে ইসরাফিল বলেন, "যে শিক্ষকতার মতো পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে গালিগালাজকে পাঠ্যবই বানায়, তার রাজনীতি যে কতটা নোংরা হবে তা হিসাব করার জন্য কেউ গণিত জানার দরকার পড়ে না।" এই অভিযোগের মাধ্যমে তিনি হাদির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি নয়, বরং তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে ভোটারদের মূল বিবেচনার বিষয় হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছেন। ঘটনাটি ঢাকা-৮ আসনের নির্বাচনী হাওয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
