গত শনিবার সৌদি আরব এবং ইরাকের মধ্যবর্তী অঞ্চলে রেকর্ড করা জোড়া ভূকম্পন মধ্যপ্রাচ্যের ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সৌদি আরবের পশ্চিমাঞ্চলে হরাত আল-শাকা এলাকায় ৩.৪ মাত্রার একটি মৃদু কম্পন অনুভূত হয়। একইসঙ্গে, ইরাকে ৫.০৯ মাত্রার তুলনামূলক শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প রেকর্ড করে সৌদি জিওলজিক্যাল সার্ভে (এসজিএস)। যদিও দুটি দেশেই ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই, কিন্তু এই জোড়া কম্পন আঞ্চলিক ভূতাত্ত্বিক নজরদারি বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
সৌদি কম্পনের উৎপত্তিস্থল: এসজিএস-এর তথ্যমতে, সৌদি আরবের মদিনা এবং তাবুক গভর্নরেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হরাত আল-শাকা লাভা ক্ষেত্র থেকে প্রায় ৮৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে কম্পনটির উৎপত্তি। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩.৪। এই অঞ্চলটিকে মূলত আগ্নেয়গিরি-সংশ্লিষ্ট লাভা ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যেখানে ভূতাত্ত্বিক ফল্ট লাইনে সামান্য সঞ্চালন অস্বাভাবিক নয়। তবে স্বল্প মাত্রার এই কম্পন স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে তেমন আতঙ্ক সৃষ্টি করেনি।
ইরাকে উচ্চ মাত্রার কম্পন: সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে ইরাকে রেকর্ড করা ৫.০৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পটি। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, এই অঞ্চলের টেকটোনিক প্লেটগুলিতে বড় ধরনের শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে। যদিও ৫.০৯ মাত্রার কম্পনে বড় আকারের ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকে, কিন্তু প্রাথমিক রিপোর্টে কোনো গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর আসেনি। এই দ্রুত সতর্কতা ব্যবস্থা এবং প্রস্তুত থাকার ফল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এসজিএস-এর ভূমিকা ও প্রতিক্রিয়া: সৌদি জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, জাতীয় সিসমিক মনিটরিং নেটওয়ার্ক অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এই দুটি কম্পনই রেকর্ড করে এবং দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। তারা এই অঞ্চলে চলমান ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপের উপর নিবিড় নজরদারি অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের কার্যকলাপ প্লেটগুলির মধ্যেকার স্বাভাবিক চাপ মুক্তির প্রক্রিয়া হতে পারে।
ভবিষ্যৎ নজরদারি: এই জোড়া কম্পন প্রমাণ করে যে মধ্যপ্রাচ্যের এই অংশটি ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয়। তাই ভবিষ্যতে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি এড়াতে অবকাঠামোগত মান উন্নত করা এবং জরুরি প্রস্তুতি ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করার উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
