বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে। রোববার রাতে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার চিকিৎসায় গঠিত আন্তর্জাতিক মেডিকেল বোর্ড সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী।
অধ্যাপক সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, যেহেতু খালেদা জিয়ার হার্টের সমস্যা দীর্ঘদিনের—তাঁর হার্টে স্থায়ী পেসমেকার বসানো আছে এবং রিং পরানোও হয়েছিল—সেহেতু চেস্টে (ফুসফুস) ইনফেকশন হওয়াতে একই সময়ে হার্ট ও ফুসফুস দুটোই মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। এর ফলে তিনি তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেন, যা তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন করে তোলে।
মেডিকেল বোর্ডের এই সদস্য আরও বলেন, বর্তমানে খালেদা জিয়াকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং আগামী ১২ ঘণ্টা তার স্বাস্থ্যের পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাসপাতালে আনার পরপরই বোর্ডের নির্দেশনায় দ্রুত প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী তাকে জরুরি অ্যান্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে যথাযথ সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, 'আমরা মনে করছি, উনার চিকিৎসাটা যেভাবে শুরু হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। আগামী ১২ ঘণ্টার পর মেডিকেল বোর্ড আবার বসবে এবং স্বাস্থ্যের অবস্থার ওপর পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী চিকিৎসার ব্যবস্থা নেবে।'
অন্যদিকে, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান শেষে দেশে ফেরার কয়েক মাসের মধ্যেই তার এই গুরুতর অসুস্থতা দলের নেতাকর্মী ও স্বজনদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। জানা যায়, চিকিৎসার তদারকিতে লন্ডন থেকে তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমান এবং ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা রাখছেন।
অসুস্থতার মুহূর্তে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। দীর্ঘ সময় ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি ও ফুসফুসের মতো একাধিক জটিল রোগে ভোগা ৮০ বছর বয়সী এই নেত্রীর উন্নত চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
