ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমের 'প্রগতিশীল শিক্ষকদের নির্মূল' করার বিস্ফোরক মন্তব্যটি রাজনৈতিক ও শিক্ষা মহলে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর, এই রায়ের প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০১ জন শিক্ষক একটি বিবৃতি প্রদান করেন। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সাদিক কায়েম বলেন, "প্রগতিশীল যেসব শিক্ষক খুনি হাসিনার পক্ষে স্বাক্ষর করেছে, তাদের আর বাংলাদেশে রাখা যাবে না। বাংলাদেশ থেকে তাদের নির্মূল করা হবে।" তিনি শিক্ষার্থীদের ওই শিক্ষকদের ক্লাস বয়কট করার এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের চাকরিচ্যুত করার আহ্বান জানান।
সাদিক কায়েমের এই চরমপন্থী বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাসুদ কামাল তাকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেন। তিনি ভিপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, "দুইটা ভোট পেয়ে মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এরকম বহু লোক দেখেছি ভোট পাওয়ার পরে হারিয়ে গেছে। নিজেকে সংযত করেন।" সাদিক কায়েমের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে মাসুদ কামাল বলেন, "কোন কোন শিক্ষককে থাকতে দেওয়া হবে না। বের করে দেওয়া হবে। আপনি কে বের করে দেওয়ার? কে আপনি?" তিনি সাদিক কায়েমকে মনে করিয়ে দেন যে ডাকসুর মেয়াদ শেষ হলে তিনি একজন সাধারণ নাগরিক মাত্র।
সাংবাদিক মাসুদ কামাল কায়েমের বক্তব্যের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ভিন্নমত পোষণ করার কারণে বা 'ফ্যাসিবাদের পক্ষে স্বাক্ষর' দিয়েছে বলে একজন শিক্ষককে বের করে দেওয়া যায় না। তিনি সাদিক কায়েমকেই ফ্যাসিবাদ সমর্থনের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, "ফ্যাসিবাদের পক্ষে তো আপনিও ছিলেন। আপনার সাধারণ সম্পাদকও ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিল।" তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনার কথা বললেও, কোনো শিক্ষককে বের করে দেওয়ার ক্ষমতা সাদিক কায়েমের নেই। এই ধরনের বক্তব্য একজন বিনয়ী ও সুশীল ছাত্রনেতার ভাবমূর্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও তিনি মন্তব্য করেন, যা দ্রুতই তার প্রকৃত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে দিচ্ছে।
