রাজনীতি

নীরব সুবিধা নিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী, পাল্টে যেতে পারে ভোটের হিসাব!

নীরব সুবিধা নিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী, পাল্টে যেতে পারে ভোটের হিসাব!

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন বিতর্কের কারণে সৃষ্ট তৃণমূলের বিভাজন এখন দলটির নির্বাচনী কৌশলের জন্য এক মারাত্মক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তৃণমূলের এই অস্থিরতা কার্যত প্রতিদ্বন্দ্বী দল, বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর মতো দলগুলোকে ভোটের ময়দানে নীরব সুবিধা নেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।

বিএনপির তৃণমূল বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষে রয়েছেন প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা এবং তাদের সমর্থকরা, যারা নির্বাচনী এলাকাগুলোতে অর্থ ও শ্রম দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরাও প্রত্যাশিত পরিবর্তনের আশায় একই গতিতে সক্রিয়। এই দুই গ্রুপের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধের মতো ঘটনাগুলি ভোটারদের মধ্যে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে এবং পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।

দলটির অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, ঘোষিত ২৩৬টি আসনের মধ্যে প্রায় ৪০টি আসনেই মনোনয়ন-সংক্রান্ত বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। বঞ্চিত নেতাদের অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে দলীয় জরিপ ভুল তথ্য দিয়েছে অথবা তাদের প্রকৃত শক্তিকে বিবেচনা করা হয়নি। এই চল্লিশটি আসনেই উভয় পক্ষের চলমান ব্যয় ও সংঘাত, দলের মূল নির্বাচনী প্রচারণাকে ব্যাহত করছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির মতো একটি বড় দলের এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকা মানেই প্রতিপক্ষের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের প্রচারণায় মনোনিবেশ করছে এবং বিএনপির বিভক্ত ভোটব্যাংকের দিকে নজর দিচ্ছে। যদি এই বিরোধ দ্রুত সমাধান না হয়, তবে ৪০টি আসনের ফলাফল বিএনপির হাতছাড়া হতে পারে, যা সামগ্রিকভাবে জাতীয় নির্বাচনে দলের অবস্থানকে দুর্বল করে দেবে। দলের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, দ্রুত এই বিরোধ নিষ্পত্তি করে একটি ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনী চিত্র তুলে ধরা না গেলে, এই অভ্যন্তরীণ বিভাজনই হবে বিএনপির নির্বাচনী বিপর্যয়ের মূল কারণ।