বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামোফোবিক সেকুলারিজমের ধারাটি ছিল মূলত কৃত্রিম এবং এর পতন ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি যদি তাদের কার্যক্রমে ইসলামিক শব্দভাণ্ডার (Islamic Vocabulary) বেশি করে ব্যবহার করা শুরু করে, তবে তিনি 'ইসলামিস্ট হিসেবে বরং খুশি' হবেন।
ড. গালিব সোমবার রাতে ফেসবুকে প্রকাশিত এক পোস্টে এই গভীর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। তাঁর মতে, উনিশ শতকের পশ্চিমবঙ্গীয় রেনেসাঁ এবং পাশ্চাত্যের ঔপনিবেশিক শাসনের প্রভাব থেকেই বাংলাদেশে ইসলামকে অস্বীকার করা বা ইসলামিক পরিচয়কে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার এক ধরনের ধর্মনিরপেক্ষতা তৈরি হয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ, বাম এবং সেকুলার শিবিরের মেলবন্ধনের (নেক্সাস) মাধ্যমে এই ধারাটি পুষ্টি লাভ করেছিল।
তবে অধ্যাপক গালিব মনে করেন, চলমান রাজনৈতিক পটপরিবর্তন বা 'আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়া' কেবল রাজনৈতিক ব্যবস্থারই নয়, বরং এই কৃত্রিম ইসলামোফোবিক সংস্কৃতিরও পতন হয়েছে। তাঁর মতে, এখন বাংলাদেশের মানুষ তাদের নিজস্ব মুসলিম সংস্কৃতি ও পরিচয়কে পুনর্গঠন করার সুযোগ পাচ্ছে। তিনি পূর্বাভাস দেন যে অদূর ভবিষ্যতে দলমত নির্বিশেষে ইসলাম বাংলাদেশের সকল মুসলমানের বিশ্বাস, সংস্কৃতি এবং পরিচয়ের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।
তিনি বিএনপির রাজনীতি প্রসঙ্গে সুস্পষ্টভাবে বলেন যে, যেহেতু বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান, তাই এই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের রাজনীতি করতে গেলে ইসলামিক শব্দ ব্যবহার করাটাই বিএনপির জন্য সঠিক পথ। তিনি মনে করেন, বিএনপি সহীহ ইসলামী দল কি না, এই বিতর্ক অর্থহীন। বরং তাদের উচিত হবে আওয়ামী লীগের মতো একটি সেকুলার দল হওয়ার চেষ্টা না করে, নিজেদের ইসলামিক আইডেন্টিটি ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের মূল উপাদানকে ধারণ করে জনমুখী রাজনীতি করা।
