বিশ্ব

৬০ বছরের নজিরবিহীন খরার মধ্যেই ইরান জুড়ে দাবানল: প্রায় ১৫০০ একর বনভূমি।

৬০ বছরের নজিরবিহীন খরার মধ্যেই ইরান জুড়ে দাবানল: প্রায় ১৫০০ একর বনভূমি।

ইরান বর্তমানে এক নজিরবিহীন পরিবেশগত সংকটের সম্মুখীন। গত ৬০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও ব্যাপক খরায় বিপর্যস্ত তেহরানসহ বিভিন্ন শহর ও গ্রাম। যেখানে রাজধানী তেহরানে রেশনের ভিত্তিতে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে, ঠিক সেই কঠিন সময়েই দেশটির মাজানদারান প্রদেশে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ দাবানল। এই আগুন ৭ দিনেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও জীববৈচিত্র্যে ভরপুর হিরকানিয়ান অরণ্যকে গ্রাস করছে।

গতকাল রোববার পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দাবানলের প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তবে উদ্বেগজনক তথ্য হলো, এটি ছিল মানবসৃষ্ট আগুন, কোনো প্রাকৃতিক ঘটনা নয়। ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষিত এই অরণ্যটির বয়স আড়াই থেকে ৫ কোটি বছর। এটি এমন কিছু দুষ্প্রাপ্য গাছের প্রজাতি এবং পারসিয়ান চিতাবাঘের মতো প্রাণীর আবাসস্থল, যা বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।

দাবানলের তীব্রতা বুঝতে নাসার স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে জানা গেছে, ইতোমধ্যে প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর অরণ্য ভূমি আগুনে পুড়ে গেছে। প্রাথমিক রিপোর্টে লোকালয়ে আগুন ছড়ানো বা কোনো হতাহতের খবর না এলেও, পরিবেশের এই অপূরণীয় ক্ষতি দেশের ভবিষ্যৎ পরিবেশের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ।

এদিকে, মাজানদারানের পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিম ইরানের জোলফা শহরের সংলগ্ন অরণ্যেও নতুন করে দাবানল শুরু হওয়ার খবর দিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা ইরনা। এই খরা এবং দাবানল একযোগে দেশের পরিবেশ, অর্থনীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতার ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছে। সরকার আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানবসৃষ্ট অসতর্কতাই এই বিপর্যয়ের প্রধান কারণ।