৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকা শহরে দুই লাখের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার রাজউকের ভয়াবহ সমীক্ষা প্রকাশের পরই নড়েচড়ে বসেছে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল। ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য এখন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) আরও কঠোর অবস্থানে দেখতে চাইছে সরকার। সোমবার (২৪ নভেম্বর) ‘ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাসে প্রস্তুতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনার ও মতবিনিময় সভায় সরকারি উপদেষ্টারা রাজউককে অবিলম্বে কঠোর হওয়ার এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙার ক্ষেত্রে শূন্য সহনশীলতা দেখানোর নির্দেশ দেন।
রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) ভবনে আয়োজিত এই সভায় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ভূমিকম্প মোকাবিলায় সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই বলে জোরালো মন্তব্য করেন। তিনি অবিলম্বে রাজধানীর সকল ভবনের ঝুঁকি মূল্যায়নের কাজ শুরু করার জন্য রাজউকের প্রতি আহ্বান জানান। একই সাথে, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় একটি নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষকে যুক্ত করার তাগিদ দেন তিনি। বিশেষ করে, যে সকল ভবন বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত হবে, সেগুলোর ক্ষেত্রে রাজউক ও সিটি করপোরেশনকে ‘নমনীয়তা’ পরিহার করে দ্রুত ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি রাজউককে বিশেষ ক্ষমতা প্রদানের ওপরও জোর দেন।
অন্যদিকে, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান সভায় উপস্থিত সকলকে আশ্বস্ত করে বলেন, রাজউকের আইনি সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি জানান, ‘টাউন ইম্প্রুভমেন্ট অ্যাক্ট’র প্রয়োজনীয় সংশোধনীর কাজ খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে, যা রাজউককে নগর পরিকল্পনা এবং ভবন নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কাজে আরও বেশি ক্ষমতা দেবে। এই দুটি সরকারি উপদেষ্টার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, ঢাকার মারাত্মক ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকার এখন আইনি ও প্রশাসনিক উভয় দিক থেকেই কঠোর হতে চলেছে। এই সেমিনারে রাজউকের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থার কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
