দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক দিগন্তে একটি নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে পাকিস্তান। কৌশলগত সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে তারা বাংলাদেশের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব পেশ করেছে। দেশটির সমুদ্র বিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মদ জুনাইদ আনোয়ার চৌধুরীর পক্ষ থেকে লন্ডনে বাংলাদেশের নৌ পরিবহন বিষয়ক উপদেষ্টার কাছে এই প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী, দুই দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা—পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশন (পিএনএসসি) ও বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি)-এর মধ্যে একটি প্রাতিষ্ঠানিক ও আনুষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি হবে।
এই সহযোগিতা চুক্তির লক্ষ্য বহু বিস্তৃত, যেখানে শুধু যৌথ শিপিং পরিষেবা চালুই নয়, বরং প্রযুক্তি ও নিরাপত্তার মতো ক্ষেত্রগুলোতেও পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। প্রস্তাবে বন্দর-কল সুবিধা প্রদান এবং প্রশিক্ষণের মতো প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের সামুদ্রিক খাতকে শক্তিশালী করার কথা বলা হয়েছে। এটি শুধু দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের গতিই বাড়াবে না, বরং আন্তর্জাতিক মঞ্চে উভয় দেশের প্রভাবকেও সংহত করবে।
পাকিস্তানের মন্ত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, করাচি বন্দরের অত্যাধুনিক সক্ষমতা এবং দ্রুত টার্নঅ্যারাউন্ড সময় আঞ্চলিক বাণিজ্যিক বাধা কমাতে একটি বড় সুযোগ তৈরি করতে পারে। তার মতে, ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে সামুদ্রিক ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সংযোগ স্থাপিত হলে এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর সঙ্গেও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সহজ করে তুলবে এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ইন্টিগ্রেশনে নতুন দ্বার খুলবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের একটি অংশীদারিত্ব শুধুমাত্র পণ্য পরিবহন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলোই মোকাবিলা করবে না, বরং আইএমও এবং আইএলও-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিতে সমুদ্র পরিবহন-সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দুই দেশের অভিন্ন অবস্থানকে শক্তিশালী করবে। এই প্রস্তাবটি আঞ্চলিক সাপ্লাই চেইনকে সুসংহত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার একটি বৃহত্তর লক্ষ্যের দিকে ইঙ্গিত করে।
