রাজনীতি

খালেদা জিয়ার পাশেই তারেক: প্রস্তুত গুলশানের ঐতিহ্যবাহী বাড়ি, বড় সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি

খালেদা জিয়ার পাশেই তারেক: প্রস্তুত গুলশানের ঐতিহ্যবাহী বাড়ি, বড় সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি

দীর্ঘ ১৭ বছর বিদেশে থাকার পর অবশেষে দেশের রাজনীতিতে সরাসরি ফিরতে চলেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশের ২৩৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণার মাধ্যমে বিএনপি যখন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবর দলীয় কৌশলকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল। এই প্রত্যাবর্তন ঘিরে তার ব্যক্তিগত বাসভবন এবং রাজনৈতিক কার্যালয়কে প্রস্তুত করার কাজ এখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে।

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ডিসেম্বরের শুরুর দিকেই তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা জোরালো। যদিও কৌশলগত নিরাপত্তার কারণে সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ গোপন রাখা হচ্ছে। তার প্রত্যাবর্তনের পর গুলশান-২ এভিনিউয়ের ঐতিহ্যবাহী ১৯৬ নম্বর বাড়িটি তার প্রধান ঠিকানা হবে। এটি একসময় তার মা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নামে বরাদ্দ ছিল, যা সম্প্রতি তারেক রহমানের নামে নামজারি হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, এই বাড়িটির সংস্কার কাজ এখন শেষ পর্যায়ে এবং এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। তিনি গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, "খালেদা জিয়ার বাড়ির পাশেই ছেলের অবস্থান দলীয় কার্যক্রমের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হবে।" অর্থাৎ, এই অবস্থানটি শুধু ব্যক্তিগত নয়, রাজনৈতিক কৌশলগত দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ।

বাড়িটির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এটি ১৯৮১ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তৎকালীন সরকার খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেয়। বর্তমানে দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত এই বিলাসবহুল বাড়িটিতে তিন বেড, ড্রয়িং, ডাইনিং, সুইমিংপুলসহ আধুনিক সব সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়ির চারপাশে সিসিটিভি এবং কাঁটাতারের বেষ্টনি বসানো হয়েছে।

এদিকে, তারেক রহমান দেশে ফেরার পর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকেই তার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। এই কার্যালয়েও তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর তারেক রহমানের সকল মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার ঘটনা তার প্রত্যাবর্তনের পথ সুগম করেছে। এখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই তার দেশে ফেরার চূড়ান্ত সময় নির্ধারিত হবে। এই প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে নিঃসন্দেহে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।