ধর্ম ও শিক্ষা

শতকোটি টাকার কারসাজি: সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্তে ধীরগতি

শতকোটি টাকার কারসাজি: সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্তে ধীরগতি

জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এবং প্রাক্তন সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ মোট ১৫ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে করা অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা প্রায় চার মাস পিছিয়েছে। আজ, ২৬ নভেম্বর, ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক সাব্বির ফয়েজ নতুন করে ২০২৬ সালের ৩ মার্চ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পূর্বনির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তদন্ত শেষ করতে না পারায় আদালতের কাছে আরও সময় চেয়ে আবেদন করে।

দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ মে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে এই হাই-প্রোফাইল মামলাটি দায়ের করেন। মামলার এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাৎ এবং মানি লন্ডারিংয়ের মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় পরবর্তীতে ১৬ জুন আদালত সাকিব আল হাসানের বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

মামলার মূল অভিযোগ হলো, আসামিরা একটি সুসংগঠিত চক্রের মাধ্যমে ফাটকা ব্যবসার মতো ধারাবাহিক ও প্রতারণামূলক লেনদেন করে শেয়ার বাজারে কারসাজি করতেন। তারা কৃত্রিমভাবে কিছু নির্দিষ্ট শেয়ারের দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করতেন, যার ফলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এই চক্রটি বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে উপার্জন করে, যা এজাহারে 'অপরাধলব্ধ অর্থ' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

অন্যান্য আসামিদের মধ্যে সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক মো. আবুল খায়ের (ওরফে হিরু) এবং তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এজাহারে বলা হয়েছে, হিরু প্রায় ২৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা তার স্ত্রীর সহায়তায় বিভিন্ন খাতে স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং করেছেন। এমনকি হিরুর নামে থাকা ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫৪২ কোটি টাকারও বেশি ‘অস্বাভাবিক’ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

এজাহার অনুযায়ী, হিরু কর্তৃক কারসাজিকৃত প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স ও সোনালী পেপারস লিমিটেডের শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করে সক্রিয়ভাবে মার্কেট ম্যানিপুলেশনে যোগ দেন। এই প্রক্রিয়ায় তিনি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঠকিয়ে ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকারও বেশি অর্থ অপরাধলব্ধ আয় হিসেবে উত্তোলন করেন। সামগ্রিকভাবে, মামলাটির জটিলতা, আর্থিক লেনদেনের ব্যাপকতা এবং উচ্চ-পর্যায়ের ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততার কারণেই তদন্ত সংস্থা দুদককে বারবার অতিরিক্ত সময় নিতে হচ্ছে।