মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ভারত সরকারের কাছে ফের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পাঠানো কূটনৈতিক চিঠির (নোট ভারবাল) উত্তর না মেলায় কিছুটা উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে, যদিও ঢাকা বিষয়টিকে দ্রুত সমাধানের আশা করছে না। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের আজকের মন্তব্য সেই উদ্বেগ ও প্রত্যাশার মিশ্রণকেই তুলে ধরল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন অত্যন্ত স্পষ্টভাষায় জানান, একই বিষয়ে এর আগেও দিল্লিকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, যার কোনো উত্তর আসেনি। তিনি বলেন, "হাসিনাকে হস্তান্তরে আগের চিঠির উত্তরই পাইনি, এবারের চিঠির উত্তর পাব।" এই মন্তব্য একদিকে যেমন অতীতের কূটনৈতিক ব্যর্থতা বা বিলম্বকে নির্দেশ করে, তেমনই অন্যদিকে বর্তমান উদ্যোগের সফলতা নিয়ে আশাবাদও ব্যক্ত করে।
এই ‘নোট ভারবাল’টি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতে অবস্থিত মিশনের মাধ্যমে নয়াদিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পেশ করা হয়েছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, 'নোট ভারবাল' মূলত সরকারি যোগাযোগের একটি আনুষ্ঠানিক মাধ্যম যা আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী ব্যবহৃত হয়। ভারতের পক্ষ থেকে সাড়া আসতে সময় লাগার কারণ হতে পারে বিষয়টি আইনি ও রাজনৈতিকভাবে গভীর পর্যালোচনার দাবি রাখে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের গুরুতর অভিযোগ থাকায়, তার প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। ভারত যদি তাকে হস্তান্তর করতে রাজি হয়, তবে তা দুই দেশের আইনি সহযোগিতা এবং বিচারিক প্রক্রিয়ায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আজকের বক্তব্য এটিই প্রমাণ করে যে, পুরো বিষয়টি এখনো প্রাথমিক কূটনৈতিক স্তরেই আটকে আছে এবং ঢাকার পক্ষ থেকে উত্তরের জন্য ধৈর্যশীল অপেক্ষা ছাড়া আপাতত কোনো বিকল্প নেই।
