রাজনীতি

লন্ডনের হাইকোর্ট আইনজীবীরা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সরব

লন্ডনের হাইকোর্ট আইনজীবীরা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সরব

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে প্লট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার প্রাক্কালে আন্তর্জাতিক মহলে আইনি ও রাজনৈতিক চাপ তীব্র হয়েছে। একদল প্রভাবশালী ব্রিটিশ আইনজীবী, যাদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের স্ত্রী চেরি ব্লেয়ারসহ বেশ কয়েকজন কিংস কাউন্সেল (KC) রয়েছেন, তাঁরা এই বিচারপ্রক্রিয়াকে 'সাজানো' এবং 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এই আইনজীবী প্যানেল যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার আবিদা ইসলামের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে অবিলম্বে এই 'অনিয়ম' সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন।

আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন যে, টিউলিপের অনুপস্থিতিতে বিচার পরিচালনা করা হচ্ছে, যেখানে তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের বা আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যূনতম সুযোগও পাচ্ছেন না। তাঁরা দাবি করেন, টিউলিপকে কেবল অভিযোগ সম্পর্কে অবহিত করা হয়নি তাই নয়, তিনি আইনি প্রতিনিধি নিয়োগের ক্ষেত্রেও বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, টিউলিপ কর্তৃক নিযুক্ত আইনজীবী কেবল গৃহবন্দীই হননি, বরং তাঁর পরিবারও হুমকির শিকার হওয়ায় তিনি মামলা থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। আইনজীবীদের মতে, এই ঘটনাপ্রবাহ স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে পুরো প্রক্রিয়াটি কৃত্রিমভাবে সাজানো।

উল্লেখ্য, টিউলিপ সিদ্দিক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি। তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক মামলার বিচার চলছে। যদিও টিউলিপ এই মামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে একে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে দেখছেন।

ব্রিটিশ আইনজীবীরা তাঁদের চিঠিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আইনের শাসনের প্রতি অঙ্গীকারের উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, যখন সরকার ন্যায়বিচারের কথা বলছে, তখন কেন একজন ব্রিটিশ এমপি ও নাগরিকের ক্ষেত্রে এমন অন্যায্য প্রক্রিয়া চলছে। তাঁরা বাংলাদেশ সরকারকে টিউলিপ সিদ্দিকের মামলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন ও ন্যায়বিচারের মানদণ্ড অনুসরণ করার জন্য জোর আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁদের স্পষ্ট অবস্থান, একজন নির্বাচিত ব্রিটিশ এমপির বিচার তাঁর অনুপস্থিতিতে চালিয়ে যাওয়া সম্পূর্ণরূপে অন্যায্য ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের পরিপন্থী।