অন্যান্য

৮ দশকের ভয়াবহতম অগ্নিকাণ্ড: ২৭৯ জন নিখোঁজ, তদন্তে আটক ৩

৮ দশকের ভয়াবহতম অগ্নিকাণ্ড: ২৭৯ জন নিখোঁজ, তদন্তে আটক ৩

হংকং-চায়নার হাউজিং কমপ্লেক্সে ঘটা বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডটি কেবল একটি দুর্ঘটনা নয়, এটি দেশের অগ্নি-নিরাপত্তা ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। গত প্রায় ১৭ ঘণ্টা ধরে চলা এই অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৪-এ পৌঁছালেও, কমপক্ষে ২৭৯ জন বাসিন্দার খোঁজ না মেলায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় প্রশাসন। এই ঘটনাকে দেশটির গত আট দশকের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক অগ্নিকাণ্ড হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অগ্নিকাণ্ডের সূচনা স্থানীয় সময় বিকেলে হলেও, কমপ্লেক্সের আটটি ব্লকের মধ্যে মাত্র চারটি ব্লকের আগুন আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ৭০০-রও অধিক কর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রম সত্ত্বেও আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব না হওয়ার মূল কারণ হিসেবে ভবনের চারপাশে নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত বাঁশের মাচা চিহ্নিত হয়েছে। এই মাচা দ্রুত আগুনকে এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে, যা নেভানোর কাজকে অত্যন্ত দুরূহ করে তুলেছে।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতিকে 'লেভেল ফাইভ' বা সর্বোচ্চ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মীও শহীদ হয়েছেন। এটি নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে পরিস্থিতি কতটা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে।

বর্তমানে প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হলো নিখোঁজদের উদ্ধার করা এবং আগুন লাগার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করা। এই প্রেক্ষাপটে, কর্তব্য পালনে অবহেলার দায়ে ইতোমধ্যে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখছে, ঠিক কোন গাফিলতির কারণে আগুন এত ভয়াবহ আকার ধারণ করল এবং কেন তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা গেল না।

উত্তরাঞ্চলীয় এই হাউজিং কমপ্লেক্সটি মূলত বয়স্ক জনগোষ্ঠীর বাসস্থান ছিল, যেখানে ৪ হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ বাস করত। যদিও সংস্কার কাজের কারণে উপস্থিতির সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত নয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আশপাশের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ও নিখোঁজদের পরিবারের সহায়তার জন্য হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল থেকেও শোক ও সমবেদনা জানানো হয়েছে।