সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় ঘোষণা করেছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন পূর্বাচল প্লট দুর্নীতি মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন। দুর্নীতির এই মামলায় জয় শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন।
তিনটি পৃথক মামলায় মোট ৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছিল, যার মধ্যে শেখ হাসিনা, তার দুই সন্তান (সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল) এবং তার পরিবার সংশ্লিষ্ট আরও অনেকে অভিযুক্ত। রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার একমাত্র গ্রেফতার হওয়া আসামি, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। এই রায় দেশের বিচারিক ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা ক্ষমতাশালীদের ক্ষেত্রেও আইনের সমান প্রয়োগের বার্তা দেয়।
মামলার অভিযোগ অনুসারে, রাজউক বিধিমালা এবং আইনি প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে প্রভাব খাটিয়ে প্লট গ্রহণ করা হয়েছিল। বিশেষ করে, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ব্যবহার করে ধানমন্ডির সুধাসদনে থাকা ওয়াজেদ মিয়ার প্লটের তথ্য গোপন করে মিথ্যা হলফনামা দাখিল করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, এই প্রক্রিয়ায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়, যা ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে।
বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন গত রোববার রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক সমাপ্তির পর আজকের দিনে (২৭ নভেম্বর) তিন মামলার রায়ের জন্য ধার্য করেন। আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া কঠোরভাবে আইন মেনে সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে, এই মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিকের প্লট দুর্নীতি মামলার রায় আগামী ১ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হবে। এই রায়গুলো দেশের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক পরিমণ্ডলে দুর্নীতিবিরোধী বার্তা সুসংহত করতে সাহায্য করবে।
