২৬ নভেম্বর, ২০২৫—জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক এবং সাবেক সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি বর্তমান সরকারের প্রশাসন পরিচালনা এবং সম্প্রতি জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) বদলির বিষয় নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বর্তমান সরকারকে 'লটারির সরকার' বলে তীব্র আক্রমণ করেন এবং প্রশ্ন তোলেন যে, যে সরকার লটারির মাধ্যমে গঠিত হয়, তারা প্রশাসনকেও লটারির মাধ্যমে চালাবে এটাই স্বাভাবিক।
টেলিভিশন টক শোতে তিনি মন্তব্য করেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার সময় এর অনেক অংশীদারই জানতেন না যে তারা সরকারের অংশ হতে যাচ্ছেন। এমনকি সরকারপ্রধানও সেই সময় দেশে ছিলেন না, বরং অন্য দেশে খেলাধুলায় ব্যস্ত ছিলেন। এই অসংগঠিত সরকার ব্যবস্থা প্রশাসনের মধ্যেও একই ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে বলে মনি মনে করেন।
বিএনপি নেত্রী প্রশাসনের নজিরবিহীন দলীয়করণের চিত্র তুলে ধরে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ফ্যাসিবাদী সরকার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পূর্বপুরুষের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিরূপণ করেছে এবং শুধুমাত্র 'পিওর আওয়ামী লীগ' মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে, যেমন প্রিসাইডিং, পুলিং ও রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে বসানো হয়েছে। এই দলীয় কর্মকর্তারা এখনও প্রশাসনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছেন, যা নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে চরম বাধা সৃষ্টি করছে।
তিনি সাম্প্রতিক ডিসি বদলির সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, "দুই দিন আগে যে ডিসিগুলোকে ট্রান্সফার করল তাদের অনেকের কোনো অভিজ্ঞতাই নাই। ডিসি পদে চাকরি করার জন্য যা যা দরকার সেগুলোই নাই।" তার প্রশ্ন হলো, যেখানে কর্মকর্তাদের ন্যূনতম অভিজ্ঞতা নেই এবং তারা সবাই একই রাজনৈতিক মতাদর্শের, সেখানে 'লটারি' করে তাদের পদায়ন করা কতটা যৌক্তিক।
নিলুফার চৌধুরীর মতে, লটারি তখন করা যেতে পারে যখন তিনজন কর্মকর্তার যোগ্যতা, মান এবং রাজনৈতিক অবস্থান একই হয়। কিন্তু প্রশাসনের ক্ষেত্রে এমন দলীয়করণের পর লটারি শুধুমাত্র একটি লোক দেখানো প্রক্রিয়া, যা নির্বাচনের নিরপেক্ষতাকে কোনোভাবেই নিশ্চিত করতে পারে না। তিনি মনে করেন, নির্বাচন কতটা নিরপেক্ষ হবে, তা নির্ভর করে স্থানীয় প্রার্থীরা প্রশাসনের ওপর কতটা আস্থা রাখতে পারছে তার ওপর, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ অসম্ভব।
