জাতীয়

ভারত বন্ধু’রা বাংলাদেশের শত্রু: কাজী ইব্রাহিমের রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ

ভারত বন্ধু’রা বাংলাদেশের শত্রু: কাজী ইব্রাহিমের রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ

ইসলামী বক্তা কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম তার সাম্প্রতিক এক ভিডিও বক্তব্যে কেবল একাত্তরের প্রজন্মকেই নয়, দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নিয়েও চরম আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন। তার বক্তব্যের মূল লক্ষ্য ছিল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা এবং দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে 'ভারত-বিরোধিতা'র বিষ ছড়ানো।

আলোচক কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাকে সরাসরি 'ভারতীয় চক্রান্ত' বলে দাবি করেন এবং বলেন, 'এই দেশ, এই জাতিকে খুন করেছে ৭১-এ ভারত আর আওয়ামী লীগ মিলে।' তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রসঙ্গ টেনে বিষয়টিকে সঠিক বলে দাবি করেন। এই ধরনের মন্তব্য বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের প্রতি আঘাত হানে।

তবে, তার বক্তব্যের সবচেয়ে গুরুতর অংশটি আসে যখন তিনি দেশের বিশিষ্টজনদের লক্ষ্য করে মন্তব্য করেন। তিনি খোলাখুলি বলেন, 'যেগুলো ভারতের বন্ধু এগুলো বাংলাদেশের শত্রু। সাফ কথা।' এরপরেই তিনি সরাসরি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইঙ্গিত করে বলেন, "ড. ইউনূস সাহেব-সকল ভারত বন্ধু-বাংলাদেশের জঘন্য শত্রু, এগুলোর বিচার করেন।" তিনি জনগণের কাছে সমর্থন চেয়ে ঘোষণা করেন যে, বিচারের পরে তারা 'ভোল পাল্টাবে' এবং 'কোনো ভারত বন্ধুকে বাংলাদেশের কোথাও চেয়ারে রাখবো না'।

ওয়াজের মাধ্যমে একজন ধর্মীয় বক্তার এমন রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য সাধারণ জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াতে পারে। তার এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ার পর সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক মহল থেকে তীব্র প্রতিবাদ ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তাদের দাবি, ধর্মীয় মঞ্চ ব্যবহার করে ইতিহাস বিকৃতি এবং দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে এমন উসকানিমূলক মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।