শরীয়তপুরের বন বিভাগের কার্যালয়ের ভেতরে কথিত সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাটি এখন আইনি জটিলতার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী নারী পালং মডেল থানায় মামলা দায়ের করলেও, তার অভিযোগের নাটকীয় মোড় পরিবর্তন পুরো ঘটনাটির প্রেক্ষাপট পাল্টে দিয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ভুক্তভোগী নিজেকে কলেজ শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন, যা মুহূর্তেই দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। কিন্তু পরদিনই জানা যায়, তিনি আসলে দুই সন্তানের জননী এবং তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তি বন্ধু নয়, বরং তিন বছরের প্রেমিক। এই তথ্য সামনে আসার পর ভুক্তভোগী তার বক্তব্য পরিবর্তন করেন।
নতুন ও চূড়ান্ত অভিযোগে তিনি স্বীকার করেন যে, তাকে তিনজন নয়, বরং মাত্র একজন ব্যক্তি যৌন নির্যাতন করেছে এবং আরও কয়েকজন সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। তিনি আরও জানান, এই ব্যক্তিটিকে তিনি চিনতে পেরেছেন এবং ঘটনার সময় অভিযুক্তরা তাকে মারধর করে একটি আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেছিল। তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি হলো, ভুক্তভোগী নিজেই স্বীকার করেছেন যে সঙ্গে থাকা প্রেমিক তাকে 'মামলাটি শক্ত করার জন্য' তিনজনের নাম বলতে বলেছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে প্রেমিকের ভূমিকা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। কেন তিনি ঘটনার সত্যতা গোপন করে মিথ্যা তথ্য দিতে প্ররোচনা দিলেন? এটি কি আইনি প্রক্রিয়ায় সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা ছিল, নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল—তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মামলার তদন্তে এখন কেবল অভিযুক্ত ধর্ষক বা নির্যাতনকারীই নয়, বরং প্রেমিকের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হতে পারে। ইতোমধ্যে পালং মডেল থানার ওসি মো. শাহ আলম জানিয়েছেন, ৪ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তবে ঘটনার প্রাথমিক বিভ্রান্তি এবং পরিবর্তিত অভিযোগের ফলে মামলার ভবিষ্যৎ গতিপথ কী হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
