বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬.৭। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের পরপরই দেশটির উপকূলীয় এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে সুনামি সতর্কতা জারি করেছে জাপানের আবহাওয়া সংস্থা।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ও গভীরতা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে এটি বেশ কয়েকটি অঞ্চলে তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। রাজধানী টোকিওতেও মৃদু কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানা যায়।
সুনামি সতর্কতার ফলে, উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত উঁচু ও নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য জরুরি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জাপানের আবহাওয়া বিভাগ আশঙ্কা করছে, এই মাত্রার ভূমিকম্পের ফলে উপকূলের কাছাকাছি এলাকায় সামান্য উচ্চতার (সম্ভাব্য ১ মিটার বা ৩ ফুট) সুনামি ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সময় অনুযায়ী পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে।
জাপান ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ছিল তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী এবং এটি সক্রিয় প্লেট সীমানায় আঘাত হেনেছে। তবে প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, ভূমিকম্পের ফলে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
জাপান সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। উপকূলীয় এলাকার সকল বন্দর ও মাছ ধরার নৌকাকে সতর্ক করা হয়েছে। স্থানীয় টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেলে একটানা সুনামি সংক্রান্ত জরুরি বার্তা প্রচার করা হচ্ছে, যাতে জনসাধারণ দ্রুততম সময়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।
জাপান প্রায়শই ভূমিকম্পের শিকার হয়। দেশটি বিশ্বের অন্যতম কঠোর ভূমিকম্প সহনশীল নির্মাণ বিধি অনুসরণ করে। এই কারণে শক্তিশালী ভূমিকম্পেও সাধারণত বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়। তবে সুনামি একটি ভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ায় কর্তৃপক্ষ দ্রুততম সময়ে স্থান ত্যাগের ওপর জোর দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্প একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, তবে প্রাথমিক পর্যায়ে বড় ধরনের সুনামির আশঙ্কা কম। তবুও, সতর্কতা জারি থাকায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাপান সরকার প্রস্তুত রয়েছে। জনগণের উচিত সরকারি নির্দেশিকা অনুসরণ করে নিরাপদে থাকা।
ভূমিকম্পের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়া এবং রেল চলাচলে সাময়িক বিঘ্ন ঘটার খবর পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ দ্রুত এসব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।
