রাজনীতি

সাবেক ওসিকে নিয়ে জামায়াত-বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা

সাবেক ওসিকে নিয়ে জামায়াত-বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা

নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে এক আলোচিত ঘটনায় সাবেক ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মঞ্জুর কাদেরকে ঘিরে জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের তীব্র বিক্ষোভের মুখে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হলে বিএনপিপন্থি সিনিয়র আইনজীবীরা হস্তক্ষেপ করেন এবং তাকে নিরাপদে আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করতে সাহায্য করেন। এই ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে জামায়াত ও বিএনপির সম্পর্কে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে।

জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীদের অভিযোগ, সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা শামীম ওসমানের ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন এবং তার নির্দেশে গত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে তারা ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হন। বাংলাদেশ ল'ইয়ার্স কাউন্সিলের জেলার সহকারী সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম সরাসরি অভিযোগ করেন যে, ২০১৩ সালে ওসি মঞ্জুর কাদের তাকে গ্রেপ্তার করে তার রুমে এক ঘণ্টা ধরে পিটিয়েছিলেন এবং তিনদিন গুম রেখেছিলেন। তার মামাতো ভাইকেও একই ভাবে নির্যাতন করা হয় এবং মুক্তিপণের মতো করে ৫ লাখ টাকা নেওয়া হয়। আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাওফিকুল ইসলাম মঞ্জুর কাদেরকে 'ঠান্ডা মাথার খুনি' আখ্যা দিয়ে বলেন, তারা চেয়েছিলেন তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে, কিন্তু বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হস্তক্ষেপে তা সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে, এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে জামায়াতের আইনজীবীরা সাবেক ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে আটকে 'মব জাস্টিসের' পর্যায়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আদালত প্রাঙ্গণে আইন-বহির্ভূত এমন কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিই।” তিনি আরও বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা গণ-আইন প্রয়োগ (মব জাস্টিস) আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য অত্যন্ত খারাপ। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল আদালত এলাকার শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা।

এই ঘটনা স্পষ্ট করে দেয় যে, বিগত সরকারের নির্যাতনকারী কর্মকর্তাদের নিয়ে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে এখনও তীব্র ক্ষোভ বিদ্যমান। তবে, আদালত প্রাঙ্গণে আইনগত পদ্ধতির বাইরে গিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা না করার বিষয়ে বিএনপি নেতাদের অবস্থান ভিন্ন বার্তা দিয়েছে।