একদিকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং অন্যদিকে নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ—এমন এক দ্বিমুখী পরিস্থিতিতে শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব শফিকুর রহমান কিরন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারি করা সভা-সমাবেশের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তিনি রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নে একটি উঠান বৈঠক করেন, যা কার্যত একটি নির্বাচনী প্রচারণায় পরিণত হয়।
নির্বাচনী আচরণবিধি বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা কোনো প্রকার গণজমায়েত বা মিছিল করতে পারেন না। কিন্তু শফিকুর রহমান কিরনের সভায় নেতাকর্মীরা ব্যানার ও ফুলের মালা নিয়ে উপস্থিত হন এবং সেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি স্পষ্টভাবে আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি তার দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা তুলে ধরেন এবং ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের জন্য দলীয় কর্মীদের প্রস্তুত হতে বলেন।
নির্বাচনী আইনের তোয়াক্কা না করে এমন কর্মসূচি পালনের অভিযোগ উঠলে স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়। নড়িয়া উপজেলা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট লাকী দাস সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন যে তারা খবর পেয়ে পুলিশ সহ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তবে প্রার্থীর পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি করে বৈঠক শেষ করে দেওয়া হয়। ম্যাজিস্ট্রেট জানান, তিনি যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছান, তখন সেখানে সামিয়ানা ছাড়া আর কিছুই ছিল না এবং কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদিও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউকেই হাতে-নাতে পাননি, কিন্তু প্রার্থীর বক্তব্য এবং সভার দৃশ্যাবলী প্রমাণ করে যে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে। এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রার্থীর আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আইন মেনে না চললে ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আরও কঠোর পদক্ষেপ আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
