বিশ্ব

রেকর্ড উষ্ণতার পর তুষারপাত ও বন্যার আঘাত

রেকর্ড উষ্ণতার পর তুষারপাত ও বন্যার আঘাত

দীর্ঘ সাত বছরের অসহনীয় খরার পর মরক্কোর মানুষ বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছিল, কিন্তু সেই বৃষ্টিই এখন অভিশাপ হয়ে নেমে এসেছে। দেশটির আটলান্টিক উপকূলে অবস্থিত সাফি প্রদেশে আকস্মিক বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাত রোববার এক প্রলয়ঙ্করী বন্যার সৃষ্টি করে। সোমবার পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১৪ জন আহত ব্যক্তি বর্তমানে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। বন্দরনগরী সাফির সঙ্গে দেশের অন্যান্য অংশের যোগাযোগ এখন প্রায় বিচ্ছিন্ন বললেই চলে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, বৃষ্টির তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সাফি শহরের পুরোনো বসতিগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হারিয়ে পথে বসেছেন শত শত মানুষ। প্রাদেশিক সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ত্রাণবাহী গাড়িগুলো দুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছে। এদিকে এটলাস পর্বতমালায় তুষারপাত এবং সমতলে ভারী বৃষ্টিপাত একই সঙ্গে চলায় পরিস্থিতির ভয়াবহতা আরও বেড়েছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৪ সাল ছিল মরক্কোর ইতিহাসে উষ্ণতম বছর। এই চরম তাপমাত্রার পরপরই এমন ভয়াবহ বন্যা জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ রূপকেই সামনে নিয়ে আসছে।

সাফি শহরের স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস স্থগিত রাখা হয়েছে এবং উদ্ধারকারী দলগুলো এখন সাফি-হ্রারা সড়কে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে ব্যস্ত। যদিও বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে, কিন্তু কাদা ও ধ্বংসাবশেষের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এখনো স্থবির। আবহাওয়া বিভাগ হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, মঙ্গলবার আবারও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা নতুন করে বিপর্যয়ের সৃষ্টি করতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে দুর্গতদের সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হলেও, ক্ষয়ক্ষতি এতটাই বেশি যে তা কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।